পাবিপ্রবিতে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গড়ে উঠছে নতুন সামাজিক সংগঠন, নেই নীতিমালা-তদারকি
- পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৯ PM
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গড়ে উঠছে একের পর এক নতুন সামাজিক সংগঠন। মাত্র তিন মাসে ১৫টি সংগঠন যুক্ত হলেও এসবের জন্য নেই কোনো নীতিমালা, অনুমোদন বা প্রশাসনিক তদারকি—ফলে ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা ও উদ্বেগ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে এখন পর্যন্ত নতুন করে গড়ে উঠেছে ১৫টি সংগঠন। অর্থাৎ গড়ে প্রতি মাসে একটির বেশি। অথচ প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ১৬ বছরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪টি। নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলেও, কমিটি কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করছে। কাজ তেমন এগোয়নি বলেও জানা গেছে।
সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাত বছর পর প্রথম স্বীকৃত সংগঠন হিসেবে যাত্রা শুরু করে নাট্যসংগঠন ‘অনিরুদ্ধ নাট্যদল’। একই বছরে গড়ে ওঠে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জোনাকি’ এবং পরের বছর প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পাস্ট ডিবেটিং সোসাইটি’। ধীরে ধীরে সংগঠনের সংখ্যা বাড়লেও সাম্প্রতিক তিন মাসে হঠাৎ নতুন সংগঠন গঠনের প্রবণতা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
নতুন যুক্ত হওয়া ১৫টি সংগঠনের আটটি দুই প্রধান রাজনৈতিক দল ও কয়েকজন শিক্ষকের সমর্থিত বলে অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আগে ক্যাম্পাসে কোনো সংগঠন খুলতে ছাত্রলীগের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর সেই বাধ্যবাধকতা উঠে যাওয়ায় এখন যে কেউ সহজেই সংগঠন গড়ে তুলছেন, আর প্রশাসনের কোনো নীতিমালা না থাকায় এ বিষয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
অনেকের দাবি, রাজনীতি নিষিদ্ধ ক্যাম্পাসে এসব সংগঠন এখন ছায়া রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যেগুলোর মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভবনটি চালু হলে সংগঠনগুলোকে রুম বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও কে রুম পাবে, তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
সলভার গ্রিন সংগঠনের সাবেক সভাপতি সাব্বির ইফতেখার সাকিব বলেন, ‘ক্যাম্পাসে এখন ব্যাঙের ছাতার মতো সংগঠন গজাচ্ছে। অনেকে আবার পাল্টাপাল্টি সংগঠন খুলছে। অনেক সংগঠন কয়েক দিন কার্যক্রম চালালেও টিকতে পারে না।’
নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদুল হক বলেন,
‘নীতিমালা তৈরির কাজ এখনো তেমন এগোয়নি। আমরা কাজটি শুরু করেছি। এই মাসেই আমাদের আবার একটা মিটিং আছে আমরা বসে খুব দ্রুতই কাজ করতে পারব বলে ধারনা করতে পারছি।’