ডুয়েটে ১৯ দেশের অংশগ্রহণে প্রযুক্তিনির্ভর আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

ডুয়েটে এনসিআইএম ২০২৫ কনফারেন্স
ডুয়েটে এনসিআইএম ২০২৫ কনফারেন্স  © সংগৃহীত

গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ‘নেক্সট জেনারেশন কম্পিউটিং, আইওটি অ্যান্ড মেশিন লার্নিং (এনসিআইএম ২০২৫)’। আজ শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে ডুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শাকিল পারভেজ অডিটোরিয়ামে এ কনফারেন্সের উদ্বোধন করা হয়। আয়োজিত এই কনফারেন্সে মূল লক্ষ্য চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মানসম্পন্ন গবেষণায় শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিক্ষাবিদদের উৎসাহিত করা।

দুইদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ১৯টি দেশ থেকে ৩০০ জনের বেশি গবেষক অংশ নিচ্ছেন। উপস্থাপন করা হবে মোট ১৭৩টি গবেষণাপত্র। অংশগ্রহণকারীদের কাজের ভিত্তিতে সেরাদেরকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপান, মালয়েশিয়া, স্পেন, ভারত, সৌদি আরব ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ।

কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং কনফারেন্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন। তিনি বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের সামনে যেমন নতুন সম্ভাবনা এনেছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও তৈরি করেছে। তবে মানবিকতা, নৈতিকতা ও উদ্ভাবনের সঙ্গে গবেষণার সমন্বয় ঘটিয়ে আমরা পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবো এবং একটি টেকসই ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে পারবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কনফারেন্স এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড কম্পিউটিং ও আইওটি-এর মতো প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন নতুন প্রজন্মের গবেষকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’

অনুষ্ঠানের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরেফিন কাউসার বলেন, ‘আইওটি, মেশিন লার্নিং ও পরবর্তী প্রজন্মের কম্পিউটিং এখন আর শুধু প্রযুক্তির বিষয় নয়, বরং বাস্তব সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এরইমধ্যে রোবোটিক্স ও অটোমেশনসহ নানা উদ্ভাবনে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও কনফারেন্সের জেনারেল চেয়ার অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই কনফারেন্স কেবল একটি প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং ভবিষ্যৎ নির্মাণের সম্মিলিত উদ্যোগ। কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, আইওটি ও মেশিন লার্নিং-এর যুগে আমরা স্মার্ট ও মানব-কেন্দ্রিক সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছি, যার বাস্তব প্রয়োগ ইতোমধ্যেই দেখা যাচ্ছে কৃষি, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায়।’ তিনি তরুণ গবেষকদের উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

কি-নোট বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ার পাহাং আল-সুলতান আবদুল্লাহ (ইউএমপিএসএ) ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মাদ হিরওয়ান সুলাইমান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সেশন চেয়ার ড. মোহাম্মদ শহিদ উজ জামান, সেশন কো-চেয়ার ও অর্গানাইজিং সেক্রেটারি ড. মমতাজ বেগম, অর্গানাইজি কো-চেয়ার অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম এবং কো-চেয়ার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রউফ।

কনফারেন্সের স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর। টেকনিক্যাল কো-স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ‘আই-ইইই’ ও ‘আই-ইইই কম্পিউটার সোসাইটি’ এবং টেকনিক্যাল সাপোর্ট হিসেবে থাকছে ‘আই-ইইই কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার’।

এছাড়াও ইলেকট্রনিক মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ‘এটিএন বাংলা’ এবং প্রিন্ট মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে ‘দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও দেশ রুপান্তর’ অনলাইন মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে ‘ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস’।

অনুষ্ঠানে ডুয়েটের সকল ডিন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং দেশ-বিদেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ