বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের উত্তেজনা, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বন্ধ

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ  © সংগৃহীত

ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের উত্তেজনার জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। সোমবার রাতে কলেজ প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়। মঙ্গলবার সকাল ৯টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে বলা হলেও বেলা ২টার দিকেও হল ছাড়তে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

এরই মধ্যে সকালে কলেজের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভা করে ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নগরের রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিনটি বিভাগে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। কলেজে গত সময়ে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ বিদ্যমান ছিল। ৫ আগস্টের পর কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কলেজ প্রশাসন। তবে কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কারেন্ট স্টুডেন্ট অব ম্যাক’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। এই গ্রুপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কম্বল বিতরণের একটি পোস্ট ‘অ্যাপ্রুভ’ (অনুমোদন) না করাকে ঘিরে সমস্যার সূত্রপাত হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজটি এখনও ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে—এমন অভিযোগ তোলে মহানগর ও জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কলেজের কিছু শিক্ষার্থীকে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মহানগর কমিটির নেতারা সোমবার বিকালে অধ্যক্ষের কাছে গিয়ে জানান, কলেজের আবাসিক হলে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের মজুত করা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র রয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে অমর একুশে হল ও মুক্তিযোদ্ধা হলে তল্লাশি চালায় কলেজের ক্যাম্পাস প্রশাসনের নিরাপত্তা কমিটি। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা হল থেকে কিছু রামদা, হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা জব্দ করা হয়। ওই হলের সব কক্ষের ছাত্র ও সাধারণ ছাত্রদের একটি পক্ষ তল্লাশি কার্যক্রমে বাধা দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিছু শিক্ষার্থী অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে উত্তেজনা তৈরি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাতেই কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয় কলেজ প্রশাসন। আজ সকাল ৯টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। নোটিশে আরও বলা হয়, কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সিএসই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

কলেজ প্রশাসন ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কলেজের সামনে থেকে সরে যান। আজ সকাল ১০টায় একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভায় পুরো ঘটনা ও অভিযোগের বিষয় তদন্তে জেনারেল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালাতে গেলে যাদের কক্ষ তল্লাশি চালানো হয়, তারা বিষয়টি ভালোভাবে না নেওয়ায় উত্তেজনা তৈরি হয়। তদন্ত কমিটি হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence