জন্মদিনের আগে আবরারের হত্যাকারীদের রায় নিয়ে যা জানালেন ছোট ভাই
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭ PM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৮ PM
বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়টির শেরেবাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর ছাত্রলীগের নির্মমতার শিকার আবরার ফাহাদ হয়ে ওঠেন প্রতিবাদের প্রতীক। আবরার হত্যাকাণ্ডের এই করুণ মৃত্যুতে ভেসে ওঠে ছাত্র রাজনীতির পৈশাচিকতা। আগামীকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) শহীদ আবরার ফাহাদের জন্মদিন।
জন্মদিনের আগের রাতে আবরারের হত্যাকারীদের রায় নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। আজ মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক পোস্টে তিনি লেখেন, হঠাৎ আজকে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও প্রোফাইল থেকে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০জনের ফাঁসি ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সংক্রান্ত একটি নিউজের ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, যদিও ভিডিওটির কোনো তথ্যই ভুল না, কিন্তু নিউজটি ২০২১ সালের ৮ই ডিসেম্বরের। অর্থাৎ আজ থেকে ৩ বছর আগেই এই রায় নিম্ন আদালত থেকে হয়েছে। নতুন কোনো আপডেট নয়। বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নভেম্বরে উচ্চ আদালতে শুনানি শুরু হলেও আসামিপক্ষের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিসেম্বর মাস শুনানি হয়নি। আর জানুয়ারি মাসে কোনো অজানা কারণে উচ্চ আদালতের ওই বেঞ্চ থেকে মামলা বাদ দেওয়া হয়েছিল।
রায় কবে দিবে এই বিষয়ে সবশেষে তিনি লেখেন, তবে গতকাল থেকে পুনরায় শুনানি শুরু হয়েছে এবং এখন থেকে প্রতিদিনই শুনানি থাকবে এমনটাই আমরা জানি। নিয়মিত শুনানি চললে উচ্চ আদালতের রায় ইনশাআল্লাহ মার্চ মাসের মধ্যেই চলে আসবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে পৌঁছায়, যেটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
ফৌজদারি কোনো মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কারও মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যেটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল, নিয়মিত আপিল করতে পারেন। সাধারণত ডেথ রেফারেন্স ও এসব আপিলের ওপর একসঙ্গে হাইকোর্টে শুনানি হয়ে থাকে।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেল আপিল ও আপিল করেন। পৃথক জেল আপিল গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে ওঠে। সেদিন হাইকোর্ট আসামিদের জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। পাশাপাশি নিয়মিত আপিল করেন কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা। ডেথ রেফারেন্স, জেল আপিল ও আপিলের ওপর শুনানি চলছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার ও খন্দকার বাহার রুমি এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার শুনানিতে ছিলেন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী। গত বছরের ২৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু করে। এরপর গতকাল ও আজ শুনানি হয়।
পরে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ হাসান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ পেপারবুক থেকে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়েছে। এর আগের দিন শুনানিতে পেপারবুক থেকে এজাহার, অভিযোগপত্র, অভিযোগ গঠন ও চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়ে শোনায় রাষ্ট্রপক্ষ। আগামীকাল আবার শুনানি হবে।