নোবিপ্রবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নিরব প্রতিবাদ 

প্রতিবাদ কর্মসূচি
প্রতিবাদ কর্মসূচি  © টিডিসি ফটো

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে নিরব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটাকে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সিট বানিজ্য, চাকরির বাজারে অনিয়ম, দূর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের। 

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিভিন্ন ফেস্টুন হাতে নিয়ে ও মুখে টেপ লাগিয়ে প্রতিবাদ জানায় উপস্থিত বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট এর শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, কোটার জন্য দুই হাজার মানুষ তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে, সেই স্বাধীন দেশে আবার কোটার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হওয়া সত্যিই লজ্জাজনক। বিশেষত শিক্ষাক্ষেত্রে এটি মেধার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত। এই ধরনের বৈষম্য চব্বিশ এর স্বাধীন বাংলাদেশে কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান আরিফ বলেন, ‘পোষ্য কোটা দেশের মেধাবী তরুণদের যোগ্যতাকে অবমূল্যায়িন করে। এটি সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং প্রকৃত মেধার বিকাশে বাধা দেয়। পোষ্য কোটা নয়, বরং মেধা ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা চালু করা উচিত।’ 

‘আমরা চাই, যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হোক। আসুন, পোষ্য কোটা বাতিলের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি। তেল মাথায় তেল দেয়া পোষ্য কোটা বাতিল চাই, করতে হবে!’

পোষ্য কোটার নামে প্রহসন বন্ধ করার দাবি তুলে ওশানোগ্রাফি ডিপার্ট্মেন্টের জিহাদুল ইসলাম রাফি বলেন,  যেই কোটা আমাদের ভাইদের শহীদ করেছে,যেই কোটা আমাদের ভাইদের পঙ্গুত্ব বরণ করিয়েছে,যেই কোটা আমাদের ভাইদের দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিয়েছে সেই কোটার যৌক্তিক সংস্কার আমরা চেয়েছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই পোষ্য কোটাকে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে গড়ে উঠেছে সিট বানিজ্য, চাকরির বাজারে এনেছে অনিয়ম,দূর্নীতি। যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। অতএব,এই পোষ্য কোটাকে সমূলে মূলোৎপাটন করতে হবে।যাতে করে মেধার সর্বোচ্চ মূল্যায়ন এবং একই সাথে সুযোগের ক্ষেত্র তৈরি করা যায়।

ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আব্বাস আলী বলেম, যে দেশের স্বাধীনতার জন্য দুই হাজার প্রাণ উৎসর্গ হয়েছে, সেই দেশে শিক্ষাঙ্গনে পোষ্যকোটার মতো বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা বেদনাদায়ক। পোষ্যকোটা সরাসরি মেধার সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি করে, যা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার এবং শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে।

`বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের অনুরোধ, দ্রুত এই অযৌক্তিক কোটার বিলুপ্তি ঘটিয়ে মেধাবীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হোক। আমরা প্রশাসনের শিক্ষার্থীবান্ধব মনোভাবের প্রতি আস্থাশীল এবং আশা করি, তারা মেধার বিকাশে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন। ন্যায্য শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে পোষ্যকোটার অবসান আজ সময়ের দাবি।'


সর্বশেষ সংবাদ