চিঠির অপেক্ষায় পড়ে আছে হাবিপ্রবির ডাকবাক্স

ডাকবাক্স
ডাকবাক্স  © টিডিসি ফটো

উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। নামের সঙ্গেই বোঝা যায় প্রযুক্তির বিষয়ের সঙ্গে কতটা পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একসময় হাবিপ্রবির ডাকবাক্সে অফিসিয়াল চিঠির পাশাপাশি ব্যক্তিগত চিঠিপত্র আসতো  কিন্তু এখন আর আগের মতো আসে  না। চিঠির স্থান  যেন দখল করে নিয়েছে মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম। ডকুমেন্ট পাঠানো হচ্ছে ইমেইলে। ডিজিটাল এ যুগে ডাকঘরের আবেদন দিনদিন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। হয়তো আগামীর শিশুদের সাথে ডাকবাক্সের দেখা হবে জাদুঘরে।

তবে শিক্ষকদের অফিসিয়াল চিঠিপত্র থেমে নেই। প্রতিদিন শিক্ষক কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ডকুমেন্টস পোস্ট অফিসে জমা পড়ে। জানা যায়  বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই এই ডাকবাক্স রয়েছে। বর্তমানে চিঠি বিলি দেওয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন মো. সাদেকুল ইসলাম এবং অতুল চন্দ্র রায় নামে দুজন ডাকপিয়ন।

পোস্টমাস্টার বিদ্যুত বলেন, এখানকার চিঠিপত্র তালাক সংক্রান্ত। এখানে মামলা মোকদ্দমার চিঠি আসে, অফিসিয়াল চিঠি আসে পাশাপাশি ব্যক্তিগত কিছু চিঠি আসে। অনলাইন ডিজিটাল মাধ্যমে চিঠি গুলি আদান প্রদান করা হয়। তিনি বলেন পোস্ট মেশিনের মাধ্যমে চিঠি গুলা বিলি করা হয়। প্রতিদিন কত চিঠি আসে এবং কত পাঠানো হয় তা পোস্ট মেশিনের মাধ্যমে জানা যায়।

ডাকপিয়ন সাদেকুল ইসলাম বলেন, অফিসিয়াল চিঠিপত্র নিয়মিত আসে। কিন্তু বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ হওয়ায় ব্যাক্তিগত চিঠি আগের তুলনায় কমে গেছে। সবাই এখন মেসেঞ্জারে, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামে তথ্য আদান প্রদান করে।

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জেনিস বলেন, ছোটবেলায় প্রচুর চিঠি লেখা হতো। কিন্তু সেই চিঠিগুলো কখনো ডাকবাক্সে বন্দী হতোনা। কারণ চিঠি গুলো হতো পরীক্ষার খাতায়। মার্কস এর আশায় লিখলেও সেই চিঠি গুলোর নান্দনিক মূল্য কিন্তু কম নয়। চিঠির শুরুতেই একটি শব্দ থাকতো- ‘প্রিয়’। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে চিঠির মতো চাপা পড়ে গেছে ‘প্রিয়’ শব্দটাও। আমরা এখন বলি সে আমার ‘ক্রাশ’, কখনো বলিনা সে আমার প্রিয়। মেসেঞ্জার আর হোয়াটসঅ্যাপ এর দাপটে ফাঁকা পড়ে আছে ডাকবাক্স গুলোও। ফাঁকা পড়ে আছে বললে ভুল হবে। সেখানেও হয়তো নানাবিধ দাপ্তরিক চিঠির স্থান হয়। কিন্তু সেই চিঠি গুলোতে কখনোই ‘প্রিয়’ সম্বোধন থাকেনা। হাবিপ্রবির  ডাকবাক্স ‘প্রিয়’ দিয়ে ভরে যাক সেই কামনাই করছি।

প্রিয়জনদের নিয়মিত চিঠি আদান প্রদানের মাধ্যমে ভাব বিনিময়ের প্রচেষ্টাই  ডাক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পুনরায় বাঁচিয়ে তুলতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ