যবিপ্রবি

শিক্ষাছুটিতে অর্ধেক শিক্ষক, সংকটে ধুঁকছে ফার্মেসি বিভাগ

যবিপ্রবি
যবিপ্রবি  © সংগৃহীত

শিক্ষক, ক্লাসরুম সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ফার্মেসি বিভাগ। বিভাগটিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে বর্তমানে ৮টি ব্যাচ চলমান থাকলেও মাত্র ৭ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। এদিকে নিয়ম না থাকলেও বাকি ৭ জন শিক্ষক রয়েছেন শিক্ষা ছুটিতে। যা মোট শিক্ষকের ৫০ শতাংশ। ফলে শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নিতে না পারায় ব্যহত হচ্ছে গুণগত মানের শিক্ষা কার্যক্রম।

অনিয়মিত ক্লাসের সাথে ক্লাস রুমেরও সংকট থাকায় শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যায় পরতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকদের উদাসীনতার কারণে ৫ বছরের স্নাতক প্রোগ্রাম সাড়ে ৭ বছর এবং দেড় বছরের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম ৪ বছরে শেষ করতে হয়েছে বিভাগটির শিক্ষার্থীদের। এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে একাডেমিকভাবে ক্ষতি করা হয় এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফার্মেসি বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী জানান, সাবেক শিক্ষার্থী হিসাবে আমরা যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হয়েছি সেটা খুবই কষ্টদায়ক। বিশেষ করে সাড়ে ৭ বছরে অনার্স এবং ৪ বছরে মাস্টার্স শেষ করে জীবনের আর কিছুই বাকি থাকে না। শিক্ষকদের উদাসীনতা, ফলাফল প্রকাশে দেরি, সিনিয়র শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং রাজনীতির বলি হচ্ছে শত শত শিক্ষার্থী। আমাদের শিক্ষকরা বরাবরই ঠিকমত ক্লাস রুটিন ফলো করে না। শিক্ষকদের কাছে কোনো সমস্যার কথা যারাই বলে তাদেরই একাডেমিকভাবে ক্ষতি করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতে ভয় পায়। এরকম অনেক ছাত্রছাত্রীর ক্যারিয়ার শিক্ষকরা নষ্ট করেছে শুধুমাত্র নিজেদের সুবিধার জন্য। এসকল সমস্যার সমাধান না করা গেলে প্রতিবছরেই শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ বিষয়ে বিভাগটির বর্তমান এক শিক্ষার্থী জানান, বর্তমানে আমাদের ডিপার্টমেন্টে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সহ মোট ৮ টি ব্যাচ চলমান আছে। কিন্তু আমাদের শিক্ষক ৭ জন। ৭ জন শিক্ষক দিয়ে ৮ টি ব্যাচের ক্লাস নিতে গিয়ে নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা হচ্ছে না। এছাড়া আমাদের ক্লাসরুম ৪ টি। একটি ব্যাচ ক্লাস করলে আরেকটি ব্যাচ বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ছাত্ররা তাদের পরীক্ষার ফলাফল সঠিক সময় পায়না। এক বর্ষে পরীক্ষা দিলে সেই পরীক্ষার ফলাফল পেতে পেতে আরেক বর্ষ শেষ হয়ে যায়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, খেলাধুলা ও ডিপার্টমেন্টের ক্লাবের জন্য কোন ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যায় না।

সার্বিক বিষয়ে ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কিশোর মজুমদার বলেন, ডিপার্টমেন্টের ধারাবাহিক উন্নতি হচ্ছে। আমাদের ল্যাব সংখ্যা বেড়ে ৫টি হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ল্যাব ও রিসার্চ ফ্যাসিলিটি বাড়বে। তবে ঠিকমতো ক্লাস না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষকগণ ক্লাসের বিষয়ে অনেক আন্তরিক। শিক্ষকরা অবশ্যই তাদের কোর্স শেষ করেই পরীক্ষা নেন।  কোর্সের ক্রেডিট ভিত্তিক যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সেখানে পূর্ণাঙ্গ সময় যেন দেন সে বিষয়ে শিক্ষকদের সাথে কথা বলবো। ৭ জন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে আছেন ও বর্তমান ৭ জন শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন।  যা শিক্ষার্থী ও ব্যাচ সংখ্যা অনুযায়ী কম। আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ হবে বিভাগে। আশা করি তখন সংকট কেটে যাবে। 

ক্লাসরুম সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের পাঁচটা ক্লাস রুম রয়েছে। ক্লাস সংকটের বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিলে ক্লাসরুম সংকটের নিরসন হবে।

ফলাফল দেরিতে প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের ৬ মাসের ট্রেনিং রয়েছে। ভালো প্রতিষ্ঠানে ট্রেনিং করাতে গেলে তাদের শিডিউল জটিলতার কারণে অনেক সময় দু-এক মাস দেরি হয়। ভালো কিছুর জন্য এই দু-এক মাস শিক্ষার্থীদের মেনে নেওয়া উচিত। 

তবে বিভাগটির শিক্ষার্থীদের ভাষ্য বলেন, একাডেমিক ক্যালেন্ডারের বাইরে অতিরিক্ত সময়কে কিভাবে চেয়ারম্যান স্যার মেনে নিতে বলেন? যবিপ্রবিতে অনেক বিভাগে ট্রেনিং হয়। আমাদের শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে আগে থেকে যোগাযোগ করলে এধরণের সমস্যা হয় না। বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উদাসীনতা ও শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence