জ্বালানি সংকটে ব্যাহত রাবিপ্রবির শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

পার্বত্য চট্টগ্রামে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষাকার্যক্রম চালু করে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথমে শহরের শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ২টি কক্ষ ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও ২০১৯ সালে রাঙামাটির ঝগড়াবিল মৌজার স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়।

তবে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হলেও এখনও আবাসিক হল নির্মাণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের থাকতে হয় শহরেই। কাপ্তাই লিংক রোড হয়ে নিয়মিত পরিবহণে যাতায়াত করেই ক্লাস করেন তারা। এক্ষেত্রে কাপ্তাই লিংক রোডে ভাড়ায় চালিত গাড়ির সংকট ও উচ্চ ভাড়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িই একমাত্র ভরসা শিক্ষার্থীদের।

কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় পরিবহন সেবা দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা। পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিতে বর্তমানে সপ্তাহে তিনদিন অনলাইনে ও বাকি দুইদিন সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম চালু রেখেছে রাপ্রিবি। অবশ্য গত বছরের নভেম্বর থেকে অলিখিত বিজ্ঞপ্তিতে পাঠদান প্রক্রিয়া চলে আসছে।

অনলাইনে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানা হচ্ছে না। বেশির ভাগ দিনেই অনলাইনে কোন ক্লাসের দেখাই পান না তিনি। উপরন্তু ক্লাসের সময় বিপর্যয়, অসময়ে ক্লাস নেয়া, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ইন্টারনেট না থাকাসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।

-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী

এদিকে, দীর্ঘদিন অনলাইন পাঠদানের কারণে বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে অনলাইন পাঠদানের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে শিক্ষার্থীদের উপর। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধিকাংশ সময়ে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট জটিলতায় অনলাইন ক্লাস সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এছাড়া, সব বিষয় অনলাইনে ভালোভাবে বোঝাও যায় না। দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখাও কঠিন। ফলে রাবিপ্রবির পুরো শিক্ষাব্যবস্থা এখন হুমকির মুখে।

জানতে চাইলে রাবিপ্রবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা বলেন, ‘‘আমি মনে করি আমাদের উপাচার্য মহোদয় এই বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন।’’

আরও পড়ুন: ১ জুলাই থেকে জবির সব ক্লাস সশরীরে

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জনা গেছে, এই সময়ে অনলাইন ক্লাস চান না তারা। কিছু বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, পুরো সেমিস্টার জুড়ে তিন-চারটির বেশি অনলাইন ক্লাস হয়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টানা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসের দেখা মেলে না। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাজীবন নিয়ে শঙ্কিত তারা। শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করছেন এভাবে চলতে থাকলে বড় ধরনের সেশনজটের মুখোমুখি হতে পারে তাদের।

শিক্ষকদেরও সরাসরি ক্লাস না নিলে ভালো লাগে না। সশরীরে ক্লাস না নিলে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের ভালোভাবে যোগাযোগও সম্ভব হয় না। কিছুদিন আগেও আমি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি খুব দ্রুতই আমরা সশরীরে ক্লাসে ফিরতে পারবো।

-প্রশাসন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, অনলাইনে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম মানা হচ্ছে না। বেশির ভাগ দিনেই অনলাইনে কোন ক্লাসের দেখাই পান না তিনি। উপরন্তু ক্লাসের সময় বিপর্যয়, অসময়ে ক্লাস নেয়া, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ইন্টারনেট না থাকাসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে এক প্রকার বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, হঠাৎ ক্লাস শিডিউলের কারণে জীবিকার মাধ্যম হিসেবে বেঁছে নেওয়া টিউশনির উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। নিজ বিভাগের শিক্ষকদের মনগড়া ক্লাস শিডিউলে প্রায় প্রতিদিন টিউশনির সময় পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। এতে শিক্ষক হিসেবে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর কাছে তার নিজের গুরুত্ব কমছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেকানিক্যাল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জনি বলেন, আমরা আপাতত প্রশাসনের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। নির্দেশ পেলেই আমরা তা কার্যকর করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চাকমা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের সমস্যার বিষয়টি আমরা জানি। শিক্ষকদেরও সরাসরি ক্লাস না নিলে ভালো লাগে না। সশরীরে ক্লাস না নিলে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের ভালোভাবে যোগাযোগও সম্ভব হয় না। কিছুদিন আগেও আমি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি খুব দ্রুতই আমরা সশরীরে ক্লাসে ফিরতে পারবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence