বশেমুরবিপ্রবিতে দেশের প্রথম ‘নলেজ পার্ক’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

  © টিডিসি ফটো

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) দেশের প্রথম ‘নলেজ পার্ক’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। শনিবার (১৮ মার্চ) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ-০২ এর সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব, ভারতীয় হাই-কমিশনের সহকারী হাই-কমিশনার ইন্দর জিত সাগর আইসিটি বিভাগ, বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাগণ এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিবৃন্দ। 

বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিরলস কাজ করে যাওয়ার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, নির্মাণকাজের উদ্বোধনের প্রাক্কালে, আমরা আমাদের নেতা শেখ সেলিম ভাইয়ের কাছে এই আইসিটি পার্কের কল্যাণে হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন আরও নূন্যতম ৫০ একর বৃদ্ধির আবদার জানাচ্ছি। একইসাথে মাননীয় তথ্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে উক্ত নলেজ পার্ক যেনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ভিন্ন কোনো স্থাপনা হিসেবে প্রতীয়মান না হয় এ ব্যাপারে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেন, শিগগির আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে একটি মাস্টার প্লান করে কত কোটি টাকা এবং কি কি কাজ করবো তার পূর্ণাঙ্গ ম্যাপ আমরা দিবো।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, গোপালগঞ্জে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে 'নলেজ পার্ক' স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, গোপালগঞ্জবাসীর উন্নয়নে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এই নলেজ পার্কের মাধ্যমে এখানকার তরুণ-তরুণীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হলো। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক হাজার তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং এখানে তিন হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে গোপালগঞ্জের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে আমি মনে করি। 

সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এই পার্ক স্থাপন করা হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে এখানকার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এই নলেজ পার্কে থাকবে স্টার্ট-আপ ফ্লোর ফ্যাসিলিটি যেখানে প্লাগ এন্ড প্লে সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ছাত্র-শিক্ষদের জন্য উন্নত গবেষনার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া  থাকবে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য বিশেষায়িত ল্যাব। 

তিনি আরও বলেন, একাডেমিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গবেষণার জন্য পৃথকভাবে ইনক্লুসিভ রিসার্চ ফ্যাসিলিটি স্থাপনের মাধ্যমে এখানে এমন একটি ইনোভেশন কালচার সৃষ্টি করা হবে যেখানে সরকার এবং একাডেমিয়ার সাথে ইন্ডাস্ট্রির ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে লাইফ-লং লার্নিং শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। ন্যাশনাল ও গ্লোবাল স্টেকহোল্ডার সাথে এই নলেজ পার্কের স্টার্ট-আপ এবং স্টেক হোল্ডারদের কোলাবোরেশন সৃষ্টি করা হবে। ইন্ডাস্ট্রির সাথে কোলাবোরেশন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হবে যা অত্র এলাকার ইকোনোমির পুরো ইকোসিস্টেম পরিবর্তনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। 

প্রসঙ্গত, এর আগে হাইটেক-পার্ক নির্মানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্রতা বজায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কর্তৃক সুনিয়ন্ত্রিত ও এর স্বার্থের সাথে সংগতি রেখে পরিচালনাসহ জমি অধিগ্রহণে উপাচার্য বরাবর দাবি জানায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক সমিতি ও কর্মকর্তা সমিতি।


সর্বশেষ সংবাদ