তিন শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের পুনরায় টেন্ডার, সময়মতো নতুন বই পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা
- রায়হান উদ্দিন
- প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৭ PM , আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭ AM
বই ছাপানোর ক্ষেত্রে দরপত্রে (টেন্ডার) অনিয়মের কারণে ক্রয়সংক্রান্ত সুপারিশ বাতিল করে দেয় অন্তবর্তী সরকারের ক্রয় কমিটি। কিন্তু এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ফের একই নিয়মে দরপত্র আহ্বান করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ইতোমধ্যে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং ইজিপি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে বই ছাপাখানায় যেতে দেড় থেকে দুমাস সময় লাগতে পারে। এতে নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের বই পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তারা জানান, পুনরায় দরপত্রের কারণে বই ছাপানোর কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়ে যাবে। নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্থ্যাৎ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সারাদেশের ৫৮৫ বিতরণ কেন্দ্রে বই পৌঁছানোর কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ২০২৬ সালের নতুন বর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের বই পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়ে অনিশ্চিয়তা।
জানা যায়, ১৯ আগস্ট সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির ৩২তম সভায় নতুন শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের দরপত্রের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এতে ষষ্ঠ শ্রেণির ৯৭টি দরপত্রের ৪ কোটি ৩২ লাখ বইয়ের ক্রয়মূল্য ছিল ১৮০ কোটি ৪ লাখ টাকা। সপ্তম শ্রেণির ৯৪টি দরপত্রে ৩ কোটি ৯০ লাখ বইয়ের ক্রয়মূল্য ছিল ২০০ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর অষ্টম শ্রেণির ৮৯টি দরপত্রে ৩ কোটি ৬৬ লাখ বইয়ের ক্রয়মূল্য ছিল ২২৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ তিন শ্রেণির ২৮০টি লটের ৬০০ কোটির টাকার ক্রয় সংক্রান্ত সুপারিশ বাতিল করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, আগামী বছর বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই প্রায় ৮ কোটি ৪৯ লাখ ২৫ হাজার এবং মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ২১ কোটি ৪০ লাখ বই প্রয়োজন হবে। প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বইয়ের কাজ কয়েকদিনের মধ্যে ছাপাখানায় চলে যাবে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইয়ের কাজও দ্রুত সময়ে চলে যাবে।
এদিকে দরপত্র বাতিল হওয়া তিন শ্রেণির মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল ১৯ মে, সপ্তম শ্রেণির ১৫ মে এবং অষ্টম শ্রেণির ২ জুন। বাতিল হওয়ার পর ইতোমধ্যে তিন শ্রেণির (৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম) পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আহ্বানের পর ১৪ দিনের মধ্যে দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। এরপর দেড় থেকে দুমাসের মধ্যে সকল কার্যক্রম শেষে বই ছাপা খানায় যাবে। কালক্ষেপনে বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই পৌঁছে দেওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়াও চলতি বছরও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে প্রায় তিন মাস দেরি হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। সেই পরিস্থিতির আলোকে এবার আগেভাগেই বই ছাপানোর কাজ শুরু করেছিল এনসিটিবি। কিন্তু পুনঃদরপত্রে একই শঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে জানায় এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে মুহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর বলেন, ‘পুনঃদরপত্রের কারণে বই ছাপানোর কাজটা কিছুটা দেরি হতে পারে। তবে সময়মতোই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে যাবে আশা করছি।’