জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত নয়: আহসান এইচ মনসুর

অনুষ্ঠানে অতিথিদের সাথে বিতার্কিকরা
অনুষ্ঠানে অতিথিদের সাথে বিতার্কিকরা  © টিডিসি ফটো

জুয়েলারি শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীরা স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত নয়। স্বর্ণ চোরাচালানের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। আইনি দুর্বলতার করণে স্বর্ণ চোরাচালানের সংক্রান্ত মামলার বিচার দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। 

বরিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর এফডিসিতে জুয়েলারি শিল্পের বিকাশে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের দেশে শুল্ক গোয়েন্দারা যেভাবে স্বর্ণের দোকানে অভিযান চালিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করে তা সঠিক নয়। স্বর্ণ শিল্পের বিকাশের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন করে ট্যাক্স, ভ্যাট সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশি ও বিদেশী বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে হবে। একই সাথে বাংলাদেশের জুয়েলারি পণ্য বিদেশের বাজারে জনপ্রিয় করতে এর নান্দনিকতা ও আধুনিকতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করাসহ ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।

দেশের চাহিদার ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সোনাই আসছে চোরাই পথে। প্রায় প্রতিদিনই বিমান বন্দরে স্বর্ণের ছোটবড় চালান জব্দ হচ্ছে। কখনো কখনো জব্দকৃত এই স্বর্ণের দাম দেশিয় বাজারের হিসেবে ২০/২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। স্বর্ণের চোরাচালান জব্দ হলেও কিছু কিছু অবৈধ স্বর্ণের ক্যারিয়াররা ধরা পড়লেও নেপথ্যের হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে—হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক ঋণ অনাদায়ী রয়েছে। এসব ঋণ শোধ করার বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সাথে সমঝোতা দরকার। অন্যথায় অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বর্তমানে সরকারি ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ ও অন্যান্য উৎস থেকে নির্বাহ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়নে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা টেকসই হবে না। এটি একটি গর্হিত কাজ। বর্তমানে রিজার্ভ কমে ২২ বিলিয়নে এসেছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতের পরিধি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে। ফলে আগামী সময়ে মূল্যস্ফীতি বাড়বে—বলেন ড. আহসান এইচ মনসুর।

জিডিপি কমার শঙ্কার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যয়নের কারণে এবছর বাংলাদেশের জিডিপি কমার শঙ্কা রয়েছে। বাজার ব্যবস্থাপনার সাথে ডলারের মূল্য নির্ধারণ না করলে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব বাড়বে। 

আরও পড়ুন: মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা: ফাঁস হওয়া প্রশ্নে দেশে দেড় হাজার ডাক্তার

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দেশের বৈদেশিক আয়ের সিংহভাগই আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি ও অভিবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স থেকে। দেশের জুয়েলারি শিল্পে যে অমিত সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে তাতে অনুমান করা যায় সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে জুয়েলারি শিল্পও তৈরি পোশাক রপ্তানির মতো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। 

অধিকাংশ স্বর্ণ চোরাই পথে আসে উল্লেখ করে বলেন, দেশের চাহিদার ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সোনাই আসছে চোরাই পথে। প্রায় প্রতিদিনই বিমান বন্দরে স্বর্ণের ছোটবড় চালান জব্দ হচ্ছে। কখনো কখনো জব্দকৃত এই স্বর্ণের দাম দেশিয় বাজারের হিসেবে ২০/২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। স্বর্ণের চোরাচালান জব্দ হলেও কিছু কিছু অবৈধ স্বর্ণের ক্যারিয়াররা ধরা পড়লেও নেপথ্যের হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

বর্তমানে সরকারি ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ বৈদেশিক ঋণ ও অন্যান্য উৎস থেকে নির্বাহ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়নে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা টেকসই হবে না। এটি একটি গর্হিত কাজ। বর্তমানে রিজার্ভ কমে ২২ বিলিয়নে এসেছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতের পরিধি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে। ফলে আগামী সময়ে মূল্যস্ফীতি বাড়বে—ড. আহসান এইচ মনসুর।

বর্তমানে ডলার সংকটে ১০০% মার্জিন দিয়েও স্বর্ণ আমদানি করা যাচ্ছে না। স্বর্ণ আমদানি ব্যহত হলে চোরাচালান বাড়বে, সরকার রাজস্ব হারাবে। তাই দেশের চাহিদা অনুযায়ী নুন্যতম হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক স্বর্ণ আমদানিতে ছাড় দিলে চোরাচালান বন্ধ হবে রাজস্বও বাড়বে—জানান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

‘জুয়েলারি শিল্পের বিকাশে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকদের পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা কলেজের এর বিতার্কিকরা।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মো: আলমগীর হোসেন, সাংবাদিক রুহুল আমিন রাসেল, সাংবাদিক কাবেরী মৈত্রেয় ও সাংবাদিক রেফায়েত উল্লাহ মীরধা। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ