শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানো রনির ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত

রহমত উল্লাহ রনি
রহমত উল্লাহ রনি  © ফাইল ছবি

নড়াইলের ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জুতার মালা পরানোর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত রহমত উল্লাহ রনির ছাত্রত্ব বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রনি খুলনার সরকারি বিএল কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র। কলেজের স্নাতক শাখা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লেখাপড়া করছেন তিনি।

বিএল কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ আতিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘রোববার আমাদের কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা হবে। সেই সভায় রনির ছাত্রত্ব বাতিলের ব্যাপারে আলোচনা করা হবে। যেহেতু সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তাই সভার পর আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চিঠি পাঠাব।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কোনো শিক্ষার্থীকে সরাসরি বহিষ্কার করার এখতিয়ার তাদের নেই জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সিদ্ধান্ত জানাব। তার (রনি) ছাত্রত্ব বাতিলের ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’

‘ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে এক হিন্দু শিক্ষার্থী ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন’- এমন অভিযোগ তোলে কলেজে পুলিশের সামনেই শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করা হয়।

গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন স্বপন কুমার। কলেজে গত ১৮ জুন এ নিয়ে দিনভর চলে উত্তেজনা।

এদিন বিকেলে পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।

মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্থ হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সারা দেশে।

ঘটনার ৯ দিন পর গত ২৭ জুন দুপুরে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন পুলিশের উপপরিদর্শক ও মির্জাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ মোরছালিন।

দণ্ডবিধির ৩৪, ১৪৩, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩৪১, ৩৩২, ৩৫৩, ৩৫৫, ৪৩৬, ৪২৭, ৫০০ ধারায় করা এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ মামলায় গত বুধবার দুপুরে খুলনা বিএল কলেজ এলাকা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মির্জাপুরের শাওন খান, মির্জাপুর মধ্যপাড়ার মো. মনিরুল ইসলাম এবং মির্জাপুরের সৈয়দ রিমন আলী। তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

নড়াইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে সরাসরি অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিতে দেখা গেছে রহমত উল্লাহ রনিকে।’ গ্রেপ্তার প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোববার তাদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence