স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে পুলিশ কনস্টেবলের বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী

ওই তরুণী ও পুলিশ কনস্টেবল সোহেল
ওই তরুণী ও পুলিশ কনস্টেবল সোহেল   © সংগৃহীত

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে পুলিশের এক কনস্টেবলের বাড়িতে অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। শুক্রবার (১৩ মে) উপজেলার নারায়ণসারে সিআইডি পুলিশের কনস্টেবল সোহেল রানার বাড়িতে অনশনে বসেছেন তিনি।

ওই তরুণী জানান, এখানে আসার পর প্রতিবেশীদের নিকটে জানতে পারেন ওই কনস্টেবল আগেও ৮টি বিয়ে করেছে। শুধুমাত্র প্রথম স্ত্রী এ বাড়িতে থাকে, যে সংসারে ১১ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।

তিনি জানান, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে পড়াকালীন সোহেলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন চলে প্রেমের সম্পর্ক। বছরখানেক পূর্বে ঢাকাতে রামপুরায় একটি কাজি অফিসে গিয়ে ২ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেছেন তারা। সাক্ষী হিসেবে সোহেলের এক বন্ধুও কাবিনে স্বাক্ষর করেছেন। এ সময় সোহেলের পোস্টিং জয়পুরহাটে ছিল। সেখানেই ছিলেন তারা। এরপর ঢাকায় এবং মাস দুয়েক আগে বরগুনায় বাসা ভাড়া নিয়ে ছিলেন তারা।  

তিনি আরও জানান, এরপর গেল ২৬ এপ্রিল তাকে বরগুনায় ভাড়া বাসায় রেখেই সোহেল পালিয়ে এসেছেন। পরে সোহেলের বাবা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানান তিনি। এ সময় রফিকুল ইসলাম বিভিন্নভাবে তাকে আশ্বস্ত করেন ও বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে ডাকযোগে ডিভোর্সের চিঠি পাঠিয়ে দেয় সোহেল রানা।

এদিকে বরগুনা সিআইডি কার্যালয়ে সোহেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী। পরে সোহেলের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। প্রথমে ঘরে ঢুকতে না দিলেও বাহিরে দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ বোধ করলে তাকে একটি কক্ষে বসতে দেওয়া হয়েছে। 

ওই তরুণী জানান, তার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। কুমিল্লাতেই বড় হয়েছেন তিনি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন তিনি।

সোহেল রানার মা জেবুনের নেছা জানান, মেয়েটি আমার ছেলের বউ বলে পরিচয় দিলে আমরা বিশ্বাস করিনি। পরে ছেলের সঙ্গে একাধিক ছবি দেখায় সে। আমি অসুস্থ, কী করব বুঝতে পারছি না।

আরও পড়ুন : প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকারের অভিযোগ

তিনি জানান, সোহেল তিন মাস আগে বাসায় এসেছিল। বাড়িতে স্ত্রী-কন্যা রয়েছে। তারা চাঁদপুরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। এখনো আসেননি। ৩ দিন আগে ছেলে জানায় সে বড় বিপদে পড়েছে। একটি মেয়ে বিপদে ফেলে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে। বর্তমানে মেয়েটিকে ডিভোর্স দিয়েছে সোহেল।

ছেলের একাধিক বিয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, ছেলে এর আগেও কয়েকটি বিয়ে করেছে, বিচ্ছেদও হয়েছে। তবে ঠিক কয়টা বিয়ে করেছে, সেটি বলতে পারেননি তিনি।

সোহেলের বাবা রফিকুল ইসলাম সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত করপোরাল অফিসার। বর্তমানে একটি কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত তিনি।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদ আলম জানান, পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরগুনা জেলা সিআইডি পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিছুদিন আগে সোহেল ছুটিতে যায়। ছুটি শেষ হলেও এখনো কর্মস্থলে ফেরেনি সোহেল।

 

 

 


সর্বশেষ সংবাদ