শিক্ষকের ছেলে মাসুমের ‘ভাড়াটে খুনি’ হয়ে ওঠার গল্প
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২২, ১২:৩৪ PM , আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২২, ১২:৩৪ PM
স্কুলশিক্ষক বাবার সন্তান ছিলেন মাসুম মোহাম্মদ আকাশ। তিন ভাইবোনের মাঝে সবার ছোট মাসুম ছিলেন পরিবারের খুব আদরের। এলাকায়ও ভালো ছাত্র ও ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কলেজে উঠেই পাল্টে যেতে থাকেন মাসুম। সঙ্গদোষে জড়িয়ে যান নানা অপরাধমূলক কাজে। বনে যান ‘ভাড়াটে খুনি’। আজ আমরা জানবো মাসুমের খুনি হয়ে ওঠার গল্প।
চাঁদপুরে বাড়ি হলেও মাসুমদের পরিবার বসবাস করতো রাজধানীর পশ্চিম গোড়ানের নিজেদের বাসায়। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছোটবেলা থেকে শান্ত স্বভাবের ছিলেন মাসুম। ভালো ছাত্র হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু কলেজে ওঠার পর পাল্টে যেতে থাকেন তিনি। সঙ্গদোষে জড়িয়ে পড়েন নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গ্রাফিকস ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। অপরাধে জড়িয়ে পড়ার পর দূরত্ব বাড়ে পরিবারের সঙ্গে। বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন বাবা। একসময় বিয়ে করে খিলগাঁও বাসা নিয়ে থাকা শুরু করেন মাসুম। এক দশকের বেশি সময় তিনি মা-বাবা, ভাই-বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন না। খিলগাঁও থানার ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার আশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে কিলার মাসুম। ছাত্রলীগের ওই নেতা বর্তমানে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
ডিবি জানায়, মাসুম বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শরীফ নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছিলো। পরে ছাত্রদলের এক নেতাকেও গুলি করে সে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। গুলি করে হত্যার পর থেকে অপরাধ জগতের বন্ধুদের কাছে মাসুম ‘শ্যুটার’ হিসেবে পরিচিতি পায়। বন্ধুরা তাকে এই নামেই ডাকতো। পরে ভাড়ায়ও খুন করতেন তিনি। সর্বশেষ মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপুকে গুলি করে হত্যা করেন মাসুম। এসময় তার এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন কলেজ ছাত্রী প্রীতিও।
আরও পড়ুন- গ্রাফিকস ডিজাইনের ছাত্র ছিলেন শুটার মাসুম
ঘটনার পর জয়পুরহাট দিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিতে ব্যর্থ হয়ে বগুড়া চলে আসেন মাসমু। এর আগে, তিনি গোড়ানে বন্ধুদের সঙ্গে ও বাসায় স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করেন। কাউকে না জানিয়ে তিনি ঢাকা ছাড়েন। এক বন্ধুর মাধ্যমে স্ত্রীকে বাসাভাড়া বাবদ ২০ হাজার টাকা পাঠান তিনি। বগুড়া থেকে আটকের পর মাসুমকে ঢাকায় আদালতে তোলা হয়। পুলিশ তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে।