বিদ্যালয়ের সরকারি স্থাপনা ভেঙে নির্মাণ হচ্ছে মার্কেট

সরকারি স্থাপনা ভেঙে নির্মাণাধীন ভবন
সরকারি স্থাপনা ভেঙে নির্মাণাধীন ভবন  © সংগৃহীত

চলমান করোনা সংকটে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকটি টয়লেট ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে ১৩ কক্ষ বিশিষ্ট মার্কেট ভবন। এর জন্য ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সদ্য নির্মিত বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বেষ্টনীও (বাউন্ডারি) ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির নাম ভাঙিয়ে প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদ মিয়া এসব করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীদের পয়ঃনিষ্কাশনের অসুবিধাসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত নিয়ে চিন্তিত অভিভাবক ও স্থানীয়রা।

এদিকে, অনুমতি ছাড়া সরকারি অর্থে নির্মিত স্থাপনা ভেঙে বাণিজ্যিক অবকাঠামো নির্মাণের বিধান নেই জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি গেট ও নিরাপত্তা বেষ্টনী (বাউন্ডারি) নির্মাণের জন্য ১০ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয় জেলা পরিষদ। এর কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজেশ এন্টারপ্রাইজ।

তাদের কাছ থেকে সাব ঠিকাদার হিসেবে বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ করেন বিদ্যালয়ের কোয়াব সদস্য খন্দকার আহম্মদ শাহ মোয়াজ্জিন। তবে ওই বাউন্ডারি ওয়াল ও গেট নির্মাণেও রয়েছে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ। প্রায় ৭ মাস আগে বাউন্ডারির কাজ শেষ করা হয়।

অন্যদিকে করোনায় বন্ধ থাকার সুযোগে নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভেতরে তৈরি করা হয়েছে শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বহিরাগতদের জন্য ১৩টি বাণিজ্যিক স্থাপনা। যা চালু করতে এরইমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে ছাত্রীদের পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য সেকায়েপ প্রকল্পের নির্মিত টয়লেটগুলো।

মার্কেট চালুর জন্য ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়ায় রয়েছে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাউন্ডারিও। এতে বিদ্যালয় খোলার পর ছাত্রীদের পয়ঃনিষ্কাশনের অসুবিধাসহ বখাটেদের উৎপাত বেড়ে যাবার আশঙ্কা করছেন অভিভাবকগণ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদ মিয়া বলেন, ‘বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য টয়লেট ও বাউন্ডারিসহ যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলো ভাঙার জন্য ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি রয়েছে। মার্কেটের দোকানগুলো বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও বহিরাগতদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যারা দোকান বরাদ্দ নিয়েছে তাদের টাকা দিয়েই মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে সেই টাকা জামানত হিসেবে থাকবে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ২০১২-১৩ অর্থবছরে সেকায়েপ প্রকল্পে ছাত্রীদের জন্য টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকমাস আগেই সরকারি টাকায় সেখানে বাউন্ডারির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো অনুমতি ছাড়াই সেগুলো ভেঙে মার্কেট নির্মাণ করছে বলে শুনেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনাকালে বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হয় না। এরই সুযোগ নিয়ে সরকারি স্থাপনা ভেঙে মার্কেট নির্মাণ করা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সরকারি স্থাপনা বা ছাত্রীদের জন্য নির্মিত টয়লেট ভাঙার জন্য কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। যদি স্থাপনা ভেঙে মার্কেট নির্মাণ করা হয় তাহলে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ