দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর গুলিতেই চোখ গেল ছাত্রলীগ নেতার

আল মামুন
আল মামুন  © ফাইল ছবি

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হন উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন। এ ঘটনায় এলাকার লোকজন তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল হলেও দলের প্রতিপক্ষের লোকজনের এ নিয়ে কোনো বিকার নেই। ওই সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলার একটিতে মামুনকেও আসামি করা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় চিকিৎসকেরা বলেছেন, সেই চোখে আর দেখতে পাবেন না তিনি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের যমুনা সার কারখানা এলাকায় বিজয় দিবস উদ্‌যাপনের প্রস্তুতির সময় ১৫ ডিসেম্বর রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের সমর্থকদের সঙ্গে স্থানীয় সাংসদ ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের সমর্থকদের কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে মামুনসহ ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন।

তবে ওই সংঘর্ষের পর থেকেই পুলিশ বলছে, তারা সেখানে কোনো গুলি চালায়নি। গুলি চলেছে কি না সে বিষয়ে ১০ দিনেও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু মো. ফজলুল করিম বলেন, গুলির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। গুলিতে আহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দেখে এবং তদন্তের পর সঠিকটা বলা যাবে।

উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, সাংসদের সমর্থক হিসেবে পরিচিত একজন সেখানে গুলি ছুড়লে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মামুনের চিকিৎসার খোঁজও রাখছেন রফিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, গত রোববার ঢাকার চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক পঙ্কজ কুমার রায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মামুনের ডান চোখ থেকে দুটি শটগানের গুলি (ছররা) বের করেন। আরেকটি ছররা গুলি তাঁর মাথার ভেতরে ঢুকে আছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। ওই গুলি বের করার অস্ত্রোপচারটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাই সেটি সেখানে রেখেই মামুনকে হাসপাতাল থেকে আপাতত ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

চোখে গুলি লাগার পরও প্রতিপক্ষরা ১৭ ডিসেম্বর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজমত আলী বাদী হয়ে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় মামুনকে করা হয় পাঁচ নম্বর আসামি।

অপর দিকে ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয়জন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ১৮ ডিসেম্বর উপজেলা ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ৫২ জনের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে আল মামুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানায়, আল্লাহ আমাকে বাঁচায় দিছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলত। এমপির লোকজন আমাকে গুলি করেছে।

নিজের এলাকার ছাত্রলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলেও তাঁকে দেখতে যাননি সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান। তিনি বলেন, সময়ের অভাবে তিনি মামুনকে দেখতে যেতে পারেননি। তবে তাঁর চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।

 


সর্বশেষ সংবাদ