হাতে-পায়ে ধরেও মন গলেনি ধর্ষকদের

ধর্ষণে জড়িত ছাত্রলীগের কর্মীরা
ধর্ষণে জড়িত ছাত্রলীগের কর্মীরা

সিলেটে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ সময় ওই বধূ নিজের আত্মরক্ষায় তাদের হাতে-পায়ে ধরে আকুতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু মন গলেনি ধর্ষকদের। জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে একের পর এক ধর্ষণ করে। রোববার(২৭ সেপ্টেম্বর) সিলেটের আদালতে জবানবন্দিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

এসময় তিনি জানান, তাদের বিয়ে বেশিদিন হয়নি। কয়েক মাস হবে। এরই মধ্যে স্বামীকে নিয়ে তিনি শুক্রবার বেড়াতে যান এমসি কলেজে। বিকালেই তারা এমসির ক্যাম্পাসে গিয়ে ঢুকেন। সেখানে স্বামীকে নিয়ে ক্যাম্পাসের নানা জায়গায় ঘুরেন। তারা ক্যাম্পাস ঘুরে সন্ধ্যার পর পেছন দিক দিয়ে এমসি কলেজ থেকে বের হন। এমন সময় ক্যাম্পাসের পেছনের এলাকায় ধর্ষকরা অবস্থান নিয়েছিলো। তারা তাদের দেখতে পেয়ে ঘিরে ধরে।

তিনি জানান, তাকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের আগে অস্ত্রের মুখে স্বর্ণের চেইন, টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। যাওয়ার সময় একজন বলে ওঠে ‘দেখ মেয়েটি তো সুন্দর’। এ কথা বলার পর অন্যরাও তার দিকে ফিরে তাকায়। এরপর তারা ঘুরে এসে জাপটে ধরে ওই নববধূকে। এতে প্রতিবাদ করেন সঙ্গে থাকা স্বামী। ধর্ষকরা এ সময় তার স্বামীকে মারধর করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

ওই বধূ জানান, স্বামীকে বেঁধে তারা তার ওপর নির্যাতন করে। এ সময় তিনি নিজ রক্ষার্থে তাদের হাতে-পায়ে ধরেন। কিন্তু এতে মন গলেনি ধর্ষকদের। এ সময় চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। দু’তলা থেকে কয়েকজন যুবক নিচে নামতে চাইছিলো। এ সময় তাদের ধমক দিয়ে আটকে দেয়া হয়। পরে পুলিশ গেলে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বাবলাকে নিয়ে শাহপরান থানার ওসি ধর্ষিতা নারী ও তার স্বামীকে এমসি কলেজের ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে সেখানে আরও কয়েকজন ছাত্রনেতা যান। উদ্ধারের পর ওই নারীকে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা করা হয়।

এদিকে রোববার রাতে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেন, ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে ধর্ষণের আগে তার স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিল ধর্ষকরা। ৫০ হাজার টাকা না পেয়ে ধর্ষিতার কানের স্বর্ণের দুল ও গলার চেইন এবং স্বামীর মানিব্যাগ থেকে দুই হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হন। ইচ্ছা ছিল সন্ধ্যার মধ্যেই বাসায় ফেরার। শাহপরান থেকে ফেরার পথে এমসি কলেজের গেটের সামনে গাড়ি থামিয়ে সিগারেট নিয়ে আসেন তিনি।

ওই সময় নির্যাতিত বধূর স্বামী পুলিশকে জানিয়েছিলেন- তারা সদ্য বিবাহিত। তারা বিয়ে করলেও পারিবারিক ভাবে এখনো তাদের বিয়ে মেনে নেয়া হয়নি। এ কারণে তারা আলাদা বসবাস করছেন। স্বামী সৌদি আরবে বসবাস করতেন। ওখানে থাকা অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়েছিলো। এরপর দেশে আসার পর তাদের বিয়ে হয়। নির্যাতিতার স্বামীর বাড়ি সিলেট শহরতলীর শিববাড়ি এলাকায় ও স্ত্রীর বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় বলে পুলিশ জানায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence