এলসি জালিয়াতি ইসলামী ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তার, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২২ PM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২৫ PM
সৌদি আরব থেকে খেজুর আমদানির উদ্দেশ্যে ২০২১-২২ সালে ইসলামী ব্যাংক, খুলশী শাখার মাধ্যমে অন্তত ২৫টি এলসি খোলেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নুরুল হুদা। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবারই তিনি সমপরিমাণ অর্থ, খালি চেক ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাংকে জমা রাখেন। কিন্তু করোনাকালে ব্যবসা স্থবির হলে তিনি কিছুদিন আমদানি বন্ধ রাখেন। সেই সুযোগে ব্যাংক শাখার কিছু কর্মকর্তা তার অজান্তে তার নামেই অতিরিক্ত একাধিক এলসি খুলে ফেলেন।
পরবর্তীতে সেই এলসির অর্থ পরিশোধ না করায় নুরুল হুদার জমা রাখা চেক ডিজঅনার হয় এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। প্রতিকার চেয়ে তিনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।
নুরুল হুদা জানান, ঘটনার পর তিনি একাধিকবার ইসলামী ব্যাংকের খুলশী শাখা, এমডি এবং চেয়ারম্যানসহ কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। পরে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
২০২৫ সালের ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর আদালতে দায়ের করা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৬৭, ৪৬৮, ৪০৬, ৪২০, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। গত ৪ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আব্দুল করিম সাত আসামির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনের ওপর শুনানী শেষে গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোস্তফা ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক এমডি ও খুলশী শাখার বরখাস্ত ব্যবস্থাপকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
ওই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন, ইসলামী ব্যাংক পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান ওবাইদুল্লাহ মাসুদ, সাবেক এমডি মনিরুল মাওলা, খুলশী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদুল আলম, সাবেক সেকেন্ড অফিসার মো. মহিউদ্দিন, সাবেক বৈদেশিক মুদ্রা কর্মকর্তা মুহাম্মদ জুবাইর, জুনিয়র অফিসার মুহাম্মদ রাফায়াতন, এসইভিপি ও হেড অব জোন (দক্ষিণ) এম. জুবাইর আজম হেলালী।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নুরুল হুদা বলেন, আমার নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই। প্রতারণার মাধ্যমে নেওয়া আমার চেকগুলো ফেরত চাই। এই মামলার কারণে ২০২২ সাল থেকে আমি আর কোনো ব্যবসা করতে পারিনি। ব্যবসায়িক প্রতিবন্ধকতা এই মুহূর্তে অবসান চাই। আমার আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত চাই। দীর্ঘ সময় ব্যবসা বন্ধ থাকায় অন্তত ৬ কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।