সাবেক শিবির নেতাকে ‘ছাত্রলীগ ট্যাগ’ দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ
- রংপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৮ PM
রংপুরের পীরগাছায় সাবেক শিবির নেতা সাব্বির হোসাইনকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে ট্যাগ দিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার চালিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। সাবেক শিবির নেতাকে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে ট্যাগ দিয়ে ফাঁসানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগরীর আমীর এটিএম আজম খান।
ভুক্তভোগী সাব্বির হোসাইন পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের দেউতি এলাকার দুলাল হোসাইন এর পুত্র। তিনি রংপুর মহানগরী ছাত্রশিবিরের সহকারী আইন সম্পাদক হিসেবে ২০১৫ সাল হতে ২০২২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাব্বির হোসাইন জানান, আমি ২০০৬ সাল থেকে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। আমি শিবির এর দেউতি সাংগঠনিক ওয়ার্ড এবং পারুল ইউনিয়নের দায়িত্ব পালন করেছি। পরবর্তীতে রংপুর মহানগর এর ছাত্র শিবিরের আইন বিষয়ক সহকারী সম্পাদক হিসেবে ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছি।পরবর্তীতে পেশাগত কারণে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হই। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে বিগত ১ বছর থেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে ছিলাম। এই সুযোগে গত ১৯ অক্টোবর আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে ছাত্রলীগ আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় বিএনপি নেতার গাড়িবহরে হামলার মামলায় জেলে পাঠায়।
তিনি আরো জানান, আমাকে পুলিশ গ্রেফতারের পরেই তাজরুল নামের এক ব্যক্তি গত ১৯ অক্টোবর পারুল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দেউতি ওয়ার্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ কে আমি সেই সাব্বির বলে ফেসবুকে প্রচারণা চালায়। আমি সেই সাব্বির নই তার সমস্ত প্রমাণ দেয়ার পরেও সেই ব্যক্তি আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের যোগসাজশে আমাকে ফাঁসাতে মরিয়া হয়ে উঠে এলাকার চা দোকানে বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার কিছু ছবি ও এলাকার কিছু কাজের জন্য সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের একটি ছবি দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ তাজরুল নামের সেই ব্যক্তির শেখ মুজিবের জন্ম মৃত্যু বার্ষিকী পালনসহ সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রীর টিপু মুন্সির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অসংখ্য ফুটেজ,ছবি আমার কাছে আছে। ঠুনকো কিছু ছবিকে পুঁজি করে আমাকে বারবার হেনস্তা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফেসবুকে পোস্টকারী তাজরুল ইসলাম জানান,সাব্বির আহমেদ গ্রেফতার হওয়ার পরে তার এলাকা থেকে ছাত্রলীগের ছেলেপেলের সঙ্গে বেশকিছু ছবি আমার হাতে আছে। থানা থেকেও তথ্য পাই ছেলেটি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সে সময় উত্যক্ত পরিস্থিতির কারণে তাৎক্ষণিক তথ্যের ভিত্তিতে ফেসবুকে পোস্ট করেছি। এখন যদি প্রমাণ পাই সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সে জড়িত নয়। তাহলে পুনরায় সংশোধনী দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করব।
রংপুর মহানগর ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সামিউল ইসলাম জানান, সাব্বির হোসাইনকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাব্বির আমার সময় মহানগরীর সহকারী আইন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। সে ছাত্র জীবনের পুরোটা সময় ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।
জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগরীর আমীর এটিএম আজম খান জানান, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে দূর্দিনে সাব্বির আমাদের ছাত্রশিবিরের মামলা বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সে ছাত্রশিবিরের রাজনীতি করার কারণে একবার জেল খেটিছিলো।বর্তমানে সে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য।কোনকালেই সাব্বির ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলো নাহ। সাব্বির এর বিরুদ্ধে এই অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।