কবর থেকে শিশুর মরদেহ তুলে রাতে একসঙ্গে ঘুমিয়েছিল কিশোর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৩২ PM , আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৩২ PM
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় পানিতে ডুবে মারা যাওয়া এক শিশুর মরদেহ দাফনের পর রাতে কবর খুঁড়ে মরদেহ তুলে এনে জামা–কাপড় পরিয়ে একসঙ্গে ঘুমিয়েছে এক কিশোর। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ওই কিশোরের বিছানা থেকে তিন বছরের মৃত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা।
স্থানীয় ও স্বজন সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বড় কাচনা গ্রামের শফিক মাতবরের ছেলে নাইম (৩) পানিতে ডুবে মারা যায়। সন্ধ্যায় জানাজা নামাজ শেষে পশ্চিম বড় কাচনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে পারিবারিক কবরস্থানে শিশুটিকে দাফন করা হয়। কিন্তু সকালে দেখা যায়, কবরের মাটি সরানো। শিশুর মরদেহও নেই।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশুটির এক আত্মীয় মোকলেছ ফকিরের কিশোর ছেলের খালি ঘরে পাওয়া যায় মরদেহ। পরিবারের লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে মোকলেছ ফকিরের ছোট ছেলে রাজন ফকির (১৫) কবর থেকে শিশুর মরদেহ তুলে নেওয়ার কথা স্বীকার করে। কিশোরটি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, কবরে মরদেহ না থাকার বিষয় সকালে জানাজানি হলে খোঁজখবর শুরু হয়। কিশোর রাজন ফকিরের কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, সে মরদেহ তুলে নিয়ে গেছে। পরে তার এক ভাইয়ের ঘরে গিয়ে শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়। দেখা গেছে, খাটের ওপর রেফ্রিজারেটরের কার্টন বিছিয়ে শিশুটিকে ট্রাউজার ও শার্ট পরিয়ে শুইয়ে রাখা হয়েছে। একটি সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছে। বলছে, রাতে একসঙ্গে ঘুমিয়েছিল তারা।
শিশুটির দাদা সাইদুল মাতবর বলেন, ‘আমার নাতি নাইম পানিতে পড়ে মারা যায়। তাকে সন্ধ্যায় দাফন করা হয়। আজ সকালে দেখা যায় কবরে তার লাশ নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারি, আমার ভাইগ্না রাজন ফকির রাতে কবর থেকে লাশ তুলে নিয়ে গেছে। কাফনের কাপড় ফেলে দিয়ে সে লাশকে জামাকাপড় পরিয়ে খাটে শুইয়ে রাখে। তার পাশে শুয়ে রাত্রিযাপন করে রাজন।’
সাইদুল মাতবর আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে রাজন জানায়, শিশুটি কবরে একা একা কীভাবে থাকবে! তাই সে কবর থেকে তুলে নিয়ে আসছে। আবার বলে, দাফনের সময় সবাই নাইমকে দেখেছে কিন্তু সে দেখতে পারেনি বলে তুলে নিয়ে আসছে। পরে লাশ পুনরায় দাফন করা হয়েছে।’