মুশফিকের ক্যারিয়ারে এমন দুঃসময় আর আসেনি

মুশফিকুর রহিম
মুশফিকুর রহিম   © সংগৃহীত

চট্টগ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ দুপুর ২টার আগে অনুশীলন শুরু করেছিল স্বাগতিকরা। তবে বেলা ১২টা বাজতেই ড্রেসিং রুম থেকে বেরিয়ে আসেন মুশফিকুর রহিম। নেট বোলারদের নিয়ে ঘণ্টাখানেক ব্যাটিং করেন তিনি। এরপর দলীয় অনুশীলনের শুরু থেকেই মুশির উপস্থিতি দেখা যায়। এ দৃশ্য অবশ্য নতুন কিছুই নয়। যেকোনো ম্যাচের আগের নিয়মিত ঘটনা এটি। গেল এক যুগের বেশি সময় ধরে অন্যদের চেয়ে অনুশীলনে বেশি সময় কাটান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।

তবে এবারের প্রসঙ্গটা একেবারে ভিন্ন। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না মুশফিকুর রহিমের। সদ্য সমাপ্ত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ব্যর্থতার বৃত্তেই ঘুরপাক খেয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। এ নিয়ে সমালোচনার জেরে ওয়ানডে ফরম্যাটকে বিদায় জানিয়েছিলেন মুশি। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও চিরচেনা মুশফিকের দেখা মিলছে না। সিরিজের প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে মোটের ওপর ৮ রান করেছেন। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও মাত্র ৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার। 

এ ছাড়া টেস্টে সর্বশেষ ৪ ইনিংসে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি মুশফিক, ১২ ইনিংস ধরে পাচ্ছেন না ফিফটির দেখা। এই সময়ে ৪০ রানও ছুঁতে পারেননি তিনি। প্রায় দুই দশক ও ৯৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এমন বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কখনোই যাননি মুশি।

এর আগে, ২০১৪-১৫ সালে একবার টানা ১১ ইনিংসে ফিফটির কোটা ছুঁতে পারেননি তিনি। এ ছাড়া ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মানে তরুণ বয়সে ২০০৮ সালে হাফ-সেঞ্চুরি শূন্য ছিল তার ব্যাট।

এদিকে লাল-সবুজের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে একশ টেস্ট খেলার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মুশি। এমন সময়ে তার ফর্মহীনতা দলের জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নানান আলোচনা-সমালোচনায় তাকে নিয়ে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে হোম অব ক্রিকেটপাড়া। মুশিও হয়তো রানে ফেরার তাড়না অনুভব করছেন। সেজন্য প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি রাখতে চাচ্ছে না। আর চট্টগ্রাম টেস্টের দু'দিন আগে অনুশীলনে বাড়তি সময় কাটানো এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সতীর্থ থেকে শুরু করে টিম স্টাফ; সবার থেকেই পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম টেস্টের অনুশীলন শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনেও মুশফিককে আগলে রেখেই যুক্তি দেখালেন তরুণ সতীর্থ জাকের আলি অনিক।

এই উইকেটকিপার ব্যাটারের মন্তব্য, ‘দলে তো উনি (মুশফিক) একা খেলছেন না। উনারই যে রান করতে হবে… রান সবারই করতে হবে। হয়তো উনি করছেন না, এটা যে কারও সঙ্গেই হতে পারে। উনারই যে প্রতিদিন রান করতে হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

অন্যদিকে সিলেট টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসের অষ্টম উইকেটে হাসান মাহমুদকে নিয়ে ৯১ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েছিলেন জাকের। টেলএন্ডার ব্যাটার হওয়া সত্ত্বেও ৫৮ বল মোকাবিলায় ১২ রান করেন হাসান। এই লড়াইয়ের মানসিকতা সবার কাছেই কাম্য জাকেরের।

তার ভাষ্যমতে, ‘ব্যাটসম্যান যতজন আছে, সবার দায়িত্ব নিতে হবে, রান করতে হবে। রান না করলেও অন্তত ওই লড়াইটা দেখাতে হবে। হাসান যেমন সবশেষ ইনিংসে... ওর ব্যাটিং, ও যে লড়াইটা করেছে, ভালো লেগেছে। এরকম ইন্টেন্ট থাকল... সবাই প্রতিদিন রান করবে না। অন্তত সবাই যেন ওই চেষ্টাটা করে। তা করলেই বড় রান করা সম্ভব।’

তবে সেই চেষ্টা গেল ১২ ইনিংস ধরেই করছেন মুশি। তবুও প্রত্যাশিত রানের দেখা মিলছে না। এবার চট্টগ্রাম টেস্টেও অভিজ্ঞ এই তারকার ব্যাট না হাসলে, একাদশে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন উঠা অস্বাভাবিক বা অযৌক্তিক কিছুই নয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence