যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তি জব্দ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১২:১০ PM , আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৮:০৬ AM
ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তি জব্দ করেছে। মঙ্গলবার রাতে আল-জাজিরার অনুসন্ধানী শাখা ‘আই-ইউনিট’-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এনসিএ।
এনসিএ জানায়, চলমান একটি দেওয়ানি তদন্তের অংশ হিসেবে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন কয়েকটি সম্পত্তি জব্দের (ফ্রিজিং) আদেশ পেয়েছে সংস্থাটি। জব্দের ফলে তিনি আর এসব সম্পদ বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত চালাচ্ছে দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
প্রসঙ্গত, গত বছর আল–জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্রে বলা হয়, সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে ৩৫০টির বেশি বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিক। অনুসন্ধানে তার লন্ডনের সেন্ট জনস উড এলাকায় অবস্থিত একটি বিলাসবহুল বাড়ির খোঁজ মেলে, যা ১১ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যে কেনা হয়েছিল। এনসিএ’র সাম্প্রতিক জব্দের তালিকায় এই বাড়িটিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আল–জাজিরার গোপনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, মন্ত্রী থাকাকালে অর্জিত সম্পদের বিষয়ে সাইফুজ্জামান নিজেই ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের কাছে বিভিন্ন দেশে থাকা তার সম্পদের বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আমাকে ‘ছেলের মতো’ মনে করেন এবং শেখ হাসিনা জানেন তার বিদেশে ব্যবসা রয়েছে।
এর আগে ২৩ মে এনসিএ জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান এবং ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নামে লন্ডনের ৯টি সম্পদও তারা জব্দ করেছে। এসব সম্পদের মূল্য প্রায় ৯ কোটি পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।
“দ্য মিনিস্টার’স মিলিয়নস” শীর্ষক আল–জাজিরার অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে, চট্টগ্রামের একটি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য সাইফুজ্জামান লন্ডন, দুবাই ও নিউইয়র্কে আবাসন খাতে ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছেন। অথচ, দেশের প্রচলিত মুদ্রা আইন অনুযায়ী একজন বাংলাদেশি নাগরিক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার বিদেশে নিতে পারেন। অনুসন্ধানে দাবি করা হয়, এসব বৈদেশিক সম্পদ তার ট্যাক্স রিটার্নে দেখানো হয়নি।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, বিদেশে তার সম্পদ কেনার অর্থ এসেছে বাংলাদেশের বাইরের বৈধ ব্যবসা থেকে এবং তিনি বছরের পর বছর এসব ব্যবসার মালিক। তার ভাষ্য, এই তদন্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তিনি নিপীড়নের শিকার।
এনসিএর এই পদক্ষেপ এমন এক সময় এলো, যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরে রয়েছেন।