সর্বোচ্চ ওজনের মাছ শিকারি পুরস্কার পেলেন তিন লাখ টাকা
- নীলফামারী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৮ PM , আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৩:১৮ PM
নীলসাগর, নাম শুনলেই যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে সমুদ্রের নীল জলরাশি। অথচ নীলসাগর কোনো সাগর নয়, এমনকি পানিও নীল নয়। ইতিহাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মেলবন্ধনে নীলফামারীর এই দিঘি দীর্ঘদিন ধরে পর্যটকদের কাছে এক অনন্য আকর্ষণ।
এই নীলসাগরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে ব্যতিক্রমী আয়োজন; মৎস্য শিকার প্রতিযোগিতা। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অসংখ্য শিকারপ্রেমী অংশ নিয়েছেন। সারাদিন ধরে চলছে উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিযোগিতা। সর্বোচ্চ ওজনের মাছ শিকারিকে প্রদান করা হয় তিন লাখ টাকার প্রধান পুরস্কার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিযোগিতাকে প্রাণবন্ত করতে গত এক মাসে নীলসাগরে ১ থেকে ৫০ কেজি ওজনের প্রায় ২০০ মণ মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন ফি ৩০ হাজার টাকা। প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ ১২ কেজি ওজনের একটি মাছ ধরা পড়েছে বলে জানা গেছে এবং উক্ত ব্যক্তির নাম মুন্না।
ঐতিহাসিক নীলসাগরের তীরে সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছে উৎসুক দর্শনার্থীরা। কেউ উপভোগ করছেন মাছ শিকারের দৃশ্য, কেউবা ছবি তুলে বন্দি করছেন স্মৃতি। বুশরা আক্তার নামে একজন দর্শনার্থী বলেন, ‘নীলফামারীতে এই প্রথম এরকম আয়োজন। আমরা পরিবারসহ দেখতে আসলাম, বিশেষ করে আমার ছেলে খুব এনজয় করছে।’ আয়োজকরা মনে করছেন, এই প্রতিযোগিতা স্থানীয় পর্যটন ও বিনোদন সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
নীলসাগরের ইতিহাস
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, খ্রিষ্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে বৈদিক যুগের রাজা বিরাট এই বিশাল দিঘি খনন করেন। প্রথমে ‘বিরাট দিঘি’ নামে পরিচিত এই জলাশয় পরে ‘বিন্না দিঘি’ নামেও খ্যাতি পায়। ধারণা করা হয়, রাজা বিরাট তাঁর বিশাল গরুর পালের পানির চাহিদা মেটাতে এ দিঘি খনন করেছিলেন এবং কন্যা বিন্নাবতীর নামানুসারে এর নাম রাখা হয়।
১৯৭৯ সালে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এম. এ. জব্বারের উদ্যোগে এর নামকরণ করা হয় ‘নীলসাগর’, যা বর্তমানে নীলফামারী সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে নীলসাগর এখনও দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সমাদৃত।