গাজীপুরে সাত মাসে ১৮ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৩৪

দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস  © সংগৃহীত

গাজীপুরের সড়ক দুর্ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে জেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৮টি গুরুতর সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। ঢাকার সন্নিকটে থাকা ও শিল্পাঞ্চলের ঘনত্বের কারণে গাজীপুরের সড়কগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, ১৫ আগস্ট সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বড়চালা এলাকায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার শিকার হলেন গৌরাঙ্গ চন্দ্র মণ্ডল (৫০), যিনি মোটরসাইকেলে মাওনার দিকে যাচ্ছিলেন। উল্টো দিক থেকে আসা একটি অজ্ঞাতনামা দ্রুতগামী যান তাকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। চালক পালিয়ে যান।

এর আগেও ১৮ জুলাই একই এলাকায় কাভার্ড ভ্যান ও সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষে মা–বাবা ও ১২ বছরের তাদের সন্তানসহ একই পরিবারের তিনজন এবং মাওনার একজন স্থানীয় বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছিলেন; আহতদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে মারা যান।
 
সেই কয়েক সপ্তাহ আগে, ১০ জুলাই শ্রীপুর ও টঙ্গী অঞ্চলে পৃথক দুর্ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতা আসাদুজ্জামান রাজিবসহ দুই ব্যক্তি নিহত হন, আর অন্তত ২৫ জন আহত হন।
 
৩০ মার্চ, ঢাকা–টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ মহাসড়কের সংযোগস্থলে পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় এক দম্পতি এবং আরও দুজন নিহত হন। এমনই একটি দুর্ঘটনায় ১৯ জানুয়ারি টঙ্গীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় একজন সাংবাদিক মিনহাজুল কবির ও তার সহযাত্রী প্রাণ হারিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: জবির বিভাগে ঝুলছে শেখ মুজিবের ছবি, চেয়ারম্যান বললেন, ‘সাংবিধানিক নিয়ম অনুসরণ করছি’

এসব দুর্ঘটনার বাইরে, বছরের শুরু থেকে শ্রীপুর, কোনাবাড়ী, কালীগঞ্জ ও গাজীপুর সিটির চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় আরও কয়েকটি প্রাণঘাতী সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। অপরিচিত হলেও আহত ও নিহত হয়েছে অনেকে, যা জানা সম্ভব হয়নি। তবে এই তথ্যগুলো শুধু সংবাদমাধ্যম ও পুলিশের আনুষ্ঠানিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সংগ্রহ করা।
 
গাজীপুর ঢাকা বিভাগের আওতাভুক্ত হওয়ায়, ঢাকা বিভাগের দুর্ঘটনার একটি বড় অংশ এখানেই ঘটে।
 
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, গাজীপুরে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে আঞ্চলিক সড়কে অতিরিক্ত গতির যানবাহন, মোটরসাইকেল চালকদের আইন অমান্য এবং হেলমেট ও নিরাপত্তা বেষ্টনবিহীনতা, সড়কের নকশাগত ত্রুটি ও পর্যাপ্ত নজরদারির অভাব। তারা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার স্থাপন, সিসিটিভি ক্যামেরা ও গতিনিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।
 
এই সাত মাসের পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, গাজীপুরের সড়কগুলোয় প্রতিদিনের মতো প্রাণহানি রোধ করতে হলে তাৎক্ষণিক এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।


সর্বশেষ সংবাদ