আনোয়ারায় ফের বন্য হাতির হানা, আতঙ্কে স্থানীয়রা

আনোয়ারায় ফের বন্য হাতির হানা
আনোয়ারায় ফের বন্য হাতির হানা  © টিডিসি

চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আবারও দেখা মিলেছে বন্য হাতির। রোববার (২০ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে আনোয়ারার কোরিয়ান ইপিজেড ও কর্ণফুলীর শাহমীরপুর সংলগ্ন এলাকায় একাধিক হাতির দল বিচরণ করে। এ সময় একটি হাতিকে সড়ক পার হতে দেখা গেলে ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। তবে ভাইরাল হওয়া তিনটি হাতির ভিডিওকে অনেকেই ‘গুজব’ বলে দাবি করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব বন্য হাতি রাতে চাষাবাদের জমি, ফলের বাগান ও বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে তছনছ করছে। এতে করে কৃষকরা চরমভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই ফসলের জমিতে কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন এবং সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

দেয়াঙ বাজার এলাকার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‌‌‘আমি নিজে একটি হাতিকে সড়ক পার হতে দেখেছি। কিন্তু ভাইরাল হওয়া তিনটি হাতির ভিডিওটি আগের এবং বিভ্রান্তিকর। আজকের হাতির ভিডিও আমার মোবাইলে রয়েছে। হাতির আগমনে মানুষ আবারও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বাঁশখালী (জলদি) রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, ‘হাতি ফেরার বিষয়টি আমরা ভোরে জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত একটি হাতির দেখা মিলেছে। প্রাণহানি এড়াতে এলাকাবাসীকে সচেতন হতে হবে। অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে হাতিকে সামনে থেকে দেখার চেষ্টা বা উৎসুক জনতার কারণে।’

তিনি আরও জানান, ‘বন বিভাগ থেকে ৫টি ইআরটি (ইলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম) টিম প্রস্তুত রয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ভবিষ্যতে যদি প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বন বিভাগের মতে, পাহাড়ে খাদ্য সংকট ও বনভূমি মানুষের দখলে চলে যাওয়ায় হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসছে। এ বিষয়ে কোরিয়ান ইপিজেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, “আমি বিষয়টি নিশ্চিত নই। আমাদের এনভায়রনমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এ বিষয়ে অবগত থাকবে। আমি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।”

উল্লেখ্য, গত এক দশকে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে অন্তত ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে কর্ণফুলীর শাহমীরপুর এলাকায় হাতির আক্রমণে এক শিশুর মৃত্যু হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় জনতা। এরপর দুইবার সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করলে বনবিভাগ ও কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। পরবর্তীতে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ইআরটি সদস্যরা একটি হাতিকে বাঁশখালীর গহিন পাহাড়ে সরিয়ে নেয়। বাকি দুটি হাতি স্বাভাবিকভাবে পাহাড়ে ফিরে গেছে বলে জানা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ