‘এটা হচ্ছে গাঁজার বাজার’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান  © সংগৃহীত

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর স্থানটিতে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি ও সেবন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উদ্যানটির ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘এটা হচ্ছে গাঁজার বাজার। এখানে প্রকাশ্যে ডেকে ডেকে গাঁজা বিক্রি হয়।’

বুধবার (১৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়।

এ সময় দোকানপাট উচ্ছেদ করে দেয় আনসার সদস্যরা। অন্যদিকে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরাও নিজেদের মতো করে দোকানপাট সরিয়ে নিতে দেখা যায়।

আল-আমিন নামের একজন চা বিক্রেতা বলেন, ‘এটা হচ্ছে গাঁজার একটা বাজার। বাজারে চিংড়ি মাছ যেভাবে বিক্রি হয়, গাঁজা এখানে সেভাবেই বিক্রি হয়। আমার মনে হয়, প্রতিদিন আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ কেজি গাঁজা বিক্রি হয়। তারা ডেকে ডেকে সবাইকে জিজ্ঞেস করে—‘কয়টা লাগবে, কয়টা লাগবে।’ তাদের কিছু বলাও যায় না। সবার কাছে চাকু থাকে। কিছু বললেই আঘাত করে বসে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা মাদক বিক্রি করে, তারা সবাই প্রকাশ্যেই মাদক বিক্রি করে। কিন্তু তাদের গডফাদারকে কেউ চেনে না। জীবনে আপনি তাদের ধরতে পারবেন না। তারা হঠাৎ করেই মানুষের সঙ্গে মিশে যায়।’

জামাল শেখ নামে একজন ডেকোরেশন কর্মচারী বলেন, কয়েকটি গ্রুপ প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করে। সন্ধ্যার পর তাদের ব্যবসা শুরু হয়। তারা এখানকারই লোক। এই মাঠেই পড়ে থেকে বড় হয়েছে। গাঁজার ব্যবসা ছাড়া তারা কিছুই বোঝে না। অশিক্ষিত হওয়ার কারণে, একজন ভালো মানুষ গেলেও তারা বারবার জিজ্ঞেস করে—‘কয়টা লাগবে, কয়টা লাগবে।’

তিনি আরও জানান, কয়েকটি কিশোর গ্রুপ এখানে মাদক বিক্রি করে। সবার কাছেই থাকে চাকু। কেউ বাধা দিলে তাকে আঘাত করে। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি গাঁজা বিক্রি হয়। রাতে আবার তারা হিসাব বুঝিয়ে দেয়। ইয়াবা, মদ—এসবও তারা বিক্রি করে।

কারা জড়িত—এমন প্রশ্নে তিনি কয়েকজনের নাম প্রতিবেদককে জানান। তবে দাবি করেন যে তিনি তাদের কখনো দেখেননি।

তিনি বলেন, শাহবাগ থানায় গেলে অনেকের নামে মামলা দেখতে পাবেন। তাদের আটকের ১০ থেকে ১২ দিন পর আবার জামিনে বের হয়ে এখানে ফিরে আসে। আবার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালিদ মুনসুর জানান, প্রতিদিনই আমরা রেইড করি। কমবেশি ধরি। এখন শাহবাগ যে ব্লকেড দিয়ে দিয়েছে, সবাই এখন ওইখানেই আছে। দেখি, আমরা সময় করে রেইড দিব।

ধরে আনার পর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ধরে এনে চালান করে দিই। তারপর তারা জামিন নিয়ে বের হয়ে যায়। তাদের জামিনের লোকের অভাব নেই। 


সর্বশেষ সংবাদ