১৭টি সফট স্কিল, চাকরির বাজারে যেগুলো আপনাকে সবার চেয়ে এগিয়ে রাখবে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ PM , আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:১৯ PM
বর্তমান দুনিয়ার ব্যবসায়ী সব প্রতিষ্ঠানই এমন কর্মীদের খুঁজছে, যাদের প্রযুক্তিগত ও পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি সারা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে গড়ে ওঠা আরও কিছু দক্ষতাও থাকে—যেগুলোকে সফট স্কিল বলা হয়।
এসব স্কিল মূলত মানুষের এমন কিছু ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য, যা অন্যদের সঙ্গে সফলভাবে কাজ করতে ও সম্পর্ক গড়তে সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, এসব স্কিল মানুষের আচরণ ও আবেগীয় বুত্তিমত্তার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
এসব দক্ষতাই একজন নির্বাহী, নেতা বা ম্যানেজারকে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে ও অন্যদের ইতিবাচকভাবে উদ্বুদ্ধ করতে সহায়তা করে। এমনকি এসব দক্ষতার মাধ্যমে এমন সব নেতিবাচক প্রবণতা এড়ানো যায়, যেগুলো নিজের পেশাগত দিককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এসব দক্ষতার সঙ্গায়িত করা কঠিন হলেও সব প্রতিষ্ঠানে এগুলোর প্রভাব সত্যিই আছে। কারণ, দিনশেষে ব্যবসার দুনিয়াটাই এমন, যা ক্রমাগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং বাজারের নিত্যনতুন চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন সফট স্কিল
লিংকডইন, ইনডিড, ওসিসি, কম্পুট্রাবাজো’র মতো প্ল্যাটফর্ম বিশ্লেষণে বাজারে যে ধরনের সফট স্কিলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি সেগুলো হলো—
নেতৃত্ব: কারও মাঝে এই দক্ষতা থাকলে তিনি একটি দলকে ইতিবাচক উপায়ে পরিচালনা করতে পারেন;
আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা: এটি আপনাকে মানুষ বুঝতে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে;
সমালোচনামূলক ও কৌশলগত চিন্তা: কোম্পানিকে কৌশলগত পরিকল্পনার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোকে সমালোচনামূলকভাবে বিশ্লেষণ করা;
সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন: কোম্পানির উন্নতির প্রক্রিয়াগুলোতে সৃজনশীলতা ও নতুনত্ব আনা;
পেশাগত নীতি: এটি হল একজন ব্যক্তির আচরণ, নীতি ও সততার প্রতিফলন;
কার্যকর যোগাযোগ: নিজের ভাবনাকে স্পষ্ট ও সহজভাবে প্রকাশ করা। হতে পারে সেটি লিখিতভাবে কিংবা মৌখিকভাবে;
দলগত কাজ: কোম্পানির ভালোর স্বার্থে দলের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক থাকা;
সমস্যা সমাধান: অপ্রত্যাশিত সমস্যার সমাধান পদ্ধতিগতভাবে খুঁজে বের করা ও বিশ্লেষণ করা;
মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা: নতুন পরিস্থিতিতে দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম ও নমনীয় হওয়া;
সময়ের ব্যবস্থাপনা: উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কার্যকরভাবে সময়কে ভাগ করা;
আলোচনার ক্ষমতা: বিভিন্ন বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষমতা;
সহানুভূতি: দলের ও বাজারের প্রয়োজনীয়তা বুঝে সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা;
গ্রাহক কেন্দ্রিকতা: গ্রাহকের চাহিদা ও প্রত্যাশার কথা মাথায় রাখা;
লক্ষ্য অর্জন: পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের দক্ষতা;
পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ: কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের দক্ষতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া। তারা যাতে বাধা পেরোতে পারে, সেজন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে সাহায্য করা;
প্রোঅ্যাকটিভিটি: সমস্যা বা প্রয়োজনকে আগে থেকে অনুমান করে আগাম উদ্যোগ গ্রহণ করা;
দায়িত্ব ও সততা: নিজের সব দায়িত্ব সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পালন করা;
সফট স্কিল যেভাবে বাড়িয়ে তুলবেন—
সফট স্কিল বাড়াতে নিজেকে নিয়মিত আপডেট রাখা জরুরি। এ জন্য বিভিন্ন কর্মশালা, সভা- সেমিনার বা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে।
সমালোচনামূলক চিন্তার দক্ষতা গড়ে তোলা ও নিজেকে জানার জন্য আত্মবিশ্লেষণ করা জরুরি। ব্যক্তিগত ও পেশাগত উন্নতিতে নিয়মিত ফিডব্যাক নেওয়াটাও জরুরি। মার্কিন বিশেষজ্ঞ স্টিফেন আর কভি বলেন, ‘একজন দক্ষ পেশাজীবী ও অসামান্য নেতার মধ্যকার মূল পার্থক্য সফট স্কিল। সফট স্কিল বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা অন্যদের সঙ্গে গভীর ও আন্তরিকভাবে সংযোগ স্থাপন করতে পারি। এসব স্কিল আমাদের অন্যদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে ও কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে সহায়তা করে।’
সূত্র: বিবিসি অবলম্বনে