সেলুন যখন পাঠাগার!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:২৬ AM , আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৩৫ AM
সেলুনে চুল-দাড়ি কাটতে গিয়ে প্রচন্ড ভিড়ে সেলুনে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। পুরোটা সময় কোনো কাজ থাকে না। বসে থাকতে হয় চুপটি করে। এই অলস সময়টাতে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে অভিনব কার্যক্রম শুরু করেছে রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগার। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বৃহস্পতিবার সংগঠনটির উদ্যোগে মহানগরীর ১০টি সেলুনে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব পাঠাগারের উদ্বোধন করা হয়েছে।
নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তেরখাদিয়া উপশহর এলাকায় ‘সেলুনভিত্তিক পাঠাগার’ এর উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার। এটি দেশের প্রথম সেলুনভিত্তিক পাঠাগার বলে দাবি করছেন উদ্যোক্তারা।
কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ও সেলুন পাঠাগারের উদ্যোক্তা সোহাগ আলীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসিদুল হাসান, তেরখাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিয়াকত কাদির কুমকুম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা কিশোর পাঠাগারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান। এ ধরনের সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সোহাগ আলী বলেন, দিন দিন গণগ্রন্থাগারের পাঠক কমছে। বইপড়ার পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ না থাকায় আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বইপড়া কর্মসূচি গ্রহণ করি যেন পাঠক গ্রন্থাগারে না গিয়ে ঘরে বসেই বই পড়ার সুযোগ পান। তিনি জানান, আমাদের কর্মসূচির মধ্যে ‘পলান সরকার বইপড়া আন্দোলন’ অন্যতম। যা মহানগরীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ১৯৯৭ সালে কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পাঠক সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সোহাগ বলেন, আমরা আশা করছি সেলুনভিত্তিক এই শিক্ষামূলক সেবাটি প্রত্যেক পাঠকের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।
নগরীর সব ওয়ার্ডের তিন শতাধিক সেলুনে ‘সেলুনভিত্তিক পাঠাগার’ গড়ে তোলার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে উপশহর, তেরখাদিয়া, বসুয়া, উপশহর নিউমাকের্ট, বিভাগীয় স্টেডিয়াম এলাকা, তেরখাদিয়া কলেজপাড়া এলাকায় ১০টি সেলুনে সেলুন পাঠাগার কার্যক্রম শুরু করেছে কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগার। পর্যায়ক্রমে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে তিন শতাধিক সেলুনে ‘সেলুন ভিত্তিক পাঠাগার’ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন এর উদ্যোক্তারা।
উদ্যোক্তারা জানান, সংগঠনটি সরকারি গণগ্রন্থাগারের অনুমোদিত হওয়ায় সরকারিভাবে অল্পকিছু সহায়তা পেয়ে থাকে। কিন্তু এ দিয়ে উদ্যোগকে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, কেন্দ্রীয় কিশোর পাঠাগারের কয়েকজন তরুণের উদ্যোগের কথা আমি জেনেছি। তারা যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি চমৎকার। এ ধরনের কাজে উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে সিটি করপোরেশন।