বাকৃবির গবেষণা
লেয়ার মুরগির বিষ্ঠা থেকে পরিবেশবান্ধব কম্পোস্ট সার তৈরি
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪১ PM , আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫৫ PM

বাংলাদেশে প্রায় ১১ কোটি লেয়ার মুরগি বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হয়, যার ফলে বিপুল পরিমাণ মুরগির বিষ্ঠা উৎপন্ন হয়। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এই বিষ্ঠা পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। কারণ এতে থাকা অ্যামোনিয়া ও অন্যান্য দূষণ উপাদান বায়ু ও পানির গুণগত মানের অবনতি ঘটাচ্ছে।
এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুবিজ্ঞান বিভাগের একদল গবেষক লেয়ার মুরগির বিষ্ঠা থেকে স্ট্রুভাইট সমৃদ্ধ উন্নতমানের কম্পোস্ট সার তৈরি করেছেন, যা কৃষিক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই সার ব্যবহারে পাকচং ঘাস ও ভুট্টার ফলন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাকৃবি পশুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোখলেছুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় পিএইচডি গবেষক মো. মোর্শেদ হাসান মোস্তফা ও অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন সুমন যুক্ত ছিলেন। গবেষক দল লেয়ার মুরগির বিষ্ঠার সাথে কাঠের গুঁড়া ও ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড মিশিয়ে এরোশন পদ্ধতিতে এই বিশেষ ধরনের কম্পোস্ট তৈরি করেছেন, যা স্ট্রুভাইট সমৃদ্ধ।
সম্প্রতি পশুবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত পিএইচডি সেমিনারে প্রধান গবেষক ড. মো. মোখলেছুর রহমান গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি অধ্যাপক ড. সচ্চিদানন্দ দাস চৌধুরী, পশুবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম।
তিনি বলেন, ‘স্ট্রুভাইট সমৃদ্ধ এই কম্পোস্ট ব্যবহারে ভুট্টা ও পাকচং ঘাসের ফলন প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হয়েছে। এটি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব একটি টেকসই সমাধান হতে পারে।’
পিএইচডি গবেষক মো. মোর্শেদ হাসান মোস্তফা বলেন, এই কম্পোস্ট ব্যবহারের ফলে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরতা কমবে এবং মুরগির বিষ্ঠা ব্যবস্থাপনার একটি টেকসই সমাধান পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিপুল পরিমাণ মুরগির বিষ্ঠার সঠিক ব্যবস্থাপনা পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
গবেষণা প্রকল্পটি কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে তিন বছর ধরে চলমান রয়েছে। গবেষকরা আরও পরীক্ষার মাধ্যমে এই কম্পোস্টের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করেছেন। তারা আশা করছেন, নতুন স্ট্রুভাইট সমৃদ্ধ কম্পোস্ট প্রযুক্তি দেশের কৃষকদের জন্য একটি কার্যকর ও লাভজনক সমাধান হবে।