কৃষি গুচ্ছে না থাকার পক্ষে শিক্ষকরা, যা বলছে কর্তৃপক্ষ

কৃষি গুচ্ছভুক্ত আট বিশ্ববিদ্যালয়
কৃষি গুচ্ছভুক্ত আট বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের কথা জানিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও পাঠিয়েছিল ইউজিসি। তবে শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি এ উদ্যোগ। এ পরিস্থিতিতে আট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি গুচ্ছ থাকা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ আকারে না নেওয়ার পক্ষে শিক্ষকদের বড় একটি অংশ। গত বছরও তারা এ প্রক্রিয়ার বিরোধীতা করেছিলেন। এবারও একই মনোভাব দেখাচ্ছেন। ইতিমধ্যে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ গুচ্ছের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। ফলে কৃষি গুচ্ছ থাকবে কি-না, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষকরা ইতিমধ্যে গুচ্ছের বিপক্ষে মত দিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আসলাম আলী বলেন, ‘সমিতির সাধারণ সভায় মতামত এসেছে, গুচ্ছতে থাকলে আমাদের স্বকীয়তা নষ্ট হয়। আমরা ঠিক সময়ে ক্লাস পরীক্ষা শুরু করতে পারি না। অধিকাংশ শিক্ষক মতামত দিয়েছেন আমাদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে, সঠিক সময়ে ক্লাস পরীক্ষা শুরু করতে গুচ্ছ থেকে বের হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘গুচ্ছ থেকে যদি বের হতেই হয় তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় কোন পদ্ধতিতে এগোচ্ছে, আমাদেরও সে পদ্ধতিতে এগোতে হবে। গুচ্ছ থেকে বের হওয়া একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আমরা এ মতামত উপাচার্যকে অবহিত করেছি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল  সিদ্ধান্ত নেবে।’

এ বিষয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে গুচ্ছের বিপক্ষে। তবে কর্তৃপক্ষ যেভাবে চাইবে, সেভাবেই পরীক্ষা হবে।’

তিনি বলেন, গুচ্ছ পরীক্ষা হলে একজন শিক্ষার্থীর সুযোগ নষ্ট হয়। একটি পরীক্ষা খারাপ হলে আর ভর্তির সুযোগ থাকে না। অথচ সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হলে সে পছন্দেমতো পরীক্ষা দিতে পারে। শেকৃবি শিক্ষকরা চাইলে আগের নিয়মে পরীক্ষা হতে পারে। কারণ এখানে ভর্তি পরীক্ষায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয় না। 

তবে কৃষি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী আজ মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষকরা চাচ্ছেন না গুচ্ছে থাকতে। তবে গুচ্ছ কর্তৃপক্ষ আগের সিদ্ধান্তেই আছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। সভা হলে বলা যাবে, কীভাবে এবার ভর্তি পরীক্ষা হবে।

আরো পড়ুন: ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা শুরু ২৩ ফেব্রুয়ারি

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইউজিসির কাছে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তাব চাওয়া হলেও অধ্যাদেশের খসড়া পাঠিয়েছিল, যা গ্রহণযোগ্য নয়। সংসদ অধিবেশন না থাকলে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থায় অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন। কিন্তু এখন দেশে জরুরি অবস্থা নেই। সে জন্য অধ্যাদেশ প্রণয়নের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হবে না।

এ বিষয়ে গত মাসের শেষে ইউজিসিতে আয়োজিত এক কর্মশালায় একক ভর্তি পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। একদিন পরে ইউজিসিতে এক সভায় তিনি বলেন, গত বছরের মতো আসন্ন শিক্ষাবর্ষেও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে।

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায়ে ইউজিসি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। কমিটি করে এ বিষয়ে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করেছিল। কিন্তু আসন্ন শিক্ষাবর্ষে সেটি কার্যকর হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

কৃষি গুচ্ছের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শিক্ষাবর্ষে ১ হাজার ১১৬ আসন ছিল। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৭৫, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৯৮, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৪৩, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪৫, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩১, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০ আসন এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন ছিল ৯০টি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence