বেরোবির এক ইউনিটে প্রথম, দুই ইউনিটে ফেল জান্নাত
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৩৫ PM , আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৩৫ PM
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের (স্নাতক) ভর্তি পরীক্ষায় দুইটি ইউনিটে ফেল করলেও ‘বি’ ইউনিটে (সামাজিক বিজ্ঞান) মানবিক থেকে রেকর্ড পরিমাণ মার্কস নিয়ে প্রথম হয়েছেন মোছা. মিশকাতুল জান্নাত নামে এক ভর্তিচ্ছু। অথচ, ‘বি’ ইউনিটে তিনি যে পরিমাণ মার্কস পেয়েছেন অন্য কোন ইউনিটের কোন শিফটে কেউ সে পরিমাণ মার্কস তুলতে পারেনি। মিশকাতুল জান্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বোন হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে।
মিশকাতুল জান্নাত বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার গোসাইগাড়ী ইউনিয়নের এনামুল বারীর মেয়ে। মিশকাতুল জান্নাতের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সে দ্বিতীয় মেয়াদে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
জানা যায়, মিশকাতুল জান্নাত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় এ, বি এবং এফ ইউনিটে অংশ নেন। গত ১৯ নভেম্বর সকল ইউনিটের ফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় শিফটে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে (রোল-১৪১৭৫২) অকৃতকার্য হন মিশকাত।
একইভাবে ‘এফ’ ইউনিটেও চতুর্থ শিফটে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে (রোল-৬৪১৭৫১) অকৃতকার্য হন তিনি। অথচ ‘বি’ ইউনিটের (সামাজিক বিজ্ঞান) মানবিক থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মিশকাতুল জান্নাত এমসিকিউয়ে ৮০ এর মধ্যে ৬৭.২৫০ পেয়েছেন। যা অন্য কোন ইউনিটে আর কেউ পায়নি। তার ‘বি’ ইউনিটে পরীক্ষার রোল ২৪০২৭৮।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, ‘এ’ ইউনিটে প্রথম শিফটে প্রথম স্থান অধিকারী নিলয় ঘোষ ‘বি’ ইউনিটেও প্রথম শিফটে প্রথম স্থান অধিকার করেন। একইভাবে ‘ডি’ ইউনিটে প্রথম স্থান অধিকারকারী জিহাদ রহমান ‘ই’ ইউনিটেও ৫ম স্থান অধিকার করেন। আবার ‘এ ইউনিটে (সাইন্স) প্রথম স্থান অধিকারকারী শানজিদা আলম করবী ‘বি’ ৭৪ স্থান অধিকার করেছেন।
এরকমভাবে প্রত্যেকটি ইউনিটের ১ম থেকে ৫ম স্থান অধিকারীগণ অপর যেকোনো ইউনিটে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
কিন্তু মিশকাত জান্নাত ‘বি’ ইউনিটে প্রথম হলেও অপর দুইটি ইউনিটে ফেল করেন। তাঁর বড় বোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক। নিজের ছোটবোন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক ইমরানা বারী ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক ইমরানা বারীর সাথে যোগাযোগের জন্য অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে ও এসএমএস দিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে ‘বি’ ইউনিটের সমন্বয়ক সোহেলা মুশতারী বলেন, ‘ইমরানা বারীর ছোটবোন এখানে পরীক্ষা দিয়েছে সেটা আমাদেরকে তিনি লিখিতভাবে জানাননি। যখন ও এডমিশনের জন্য আসল, ওকে আমরা চিনতাম। ফেসবুকে ছবি দেখেছি। ওকে (মিশকাতুল জান্নাত) দেখে আমরা স্তব্ধ হয়ে গেছি যে, এই মেয়ে এখানে কেন? এবং মোটেও আমরা খুশি হইনি। সত্যিকারার্থেই আমরা খুশি হইনি। খুশি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ দেশের বাইরে থাকায় তাঁর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।