পরীক্ষার রুটিনে ছুটি কম হওয়ায় অসন্তোষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সালের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার রুটিন প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ১৯ মে থেকে শুরু হবে এ পরীক্ষা। চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত। তবে এ রুটিনের ছুটি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে পরীক্ষার্থীদের একটি অংশের মাঝে। তারা বলছেন, একদিনের ছুটি পরের বিষয়ে পরিপূর্ণ প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট নয়। আর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেশন জটিলতা কমিয়ে আনতে নিয়মিত পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে। সেক্ষেত্রে এ রুটিনের বিকল্প নেই।

প্রকাশিত রুটিনে দেখা গেছে, ১৯ মে (রবিবার) ব্যাচেলর অব আর্টসের (বিএ) শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, আরবি, সংস্কৃত, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, দর্শন, ইসলাম শিক্ষা, গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান, সঙ্গীতের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। একইদিনে ব্যাচেলর অব সোশ্যাল সায়েন্সের (বিএসএস) শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, অর্থনীতির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া একইদিনে ব্যাচেলর অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (বিবিএ) শিক্ষার্থীদের মার্কেটিং, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২০ মে (সোমবার) ছুটি থাকবে। পরে আবার ২১ মে (মঙ্গলবার) শুরু হবে তিন বিভাগের দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা।

এর আগে, গত ২০ মার্চ (বুধবার) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সালের অনার্স চতুর্থ বর্ষের রুটিন প্রকাশিত হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান। রুটিনে বলা হয়েছে, তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে। ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি যথাসময়ে জানানো হবে। পরীক্ষা প্রতিদিন বেলা ১টা থেকে শুরু হবে।

জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের নাহি হোসাইন বলেন, অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষার রুটিন প্রকাশের পর থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কারণ, এই রুটিনে দেওয়া পরীক্ষার মাঝে মাত্র একদিনের ছুটি রাখা হয়েছে। যেটা অন্তত ২-৩ দিন রাখা দরকার ছিলো। পরীক্ষার মাঝে কম ছুটি শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বাড়াবে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বছর বা ৪র্থ বর্ষ হলো শিক্ষার্থীদের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা পার্ট। এ ফলাফল বাকি জীবনের পরবর্তী পদক্ষেপে কাজে দেবে। গুরুত্বপূর্ণ এ পরীক্ষায় একদিনের ছুটিতে অংশ নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। এই একদিনের ছুটিতে বিশাল পাঠ্যসূচি রিভিশন দেওয়াও অসম্ভব।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আজহার মাহমুদ বলেন, অনেক বিভাগে অনেক থিওরি রয়েছে। অনেকের আবার জটিল জটিল গণিত রয়েছে। একদিনের ছুটিতে এসবের যথাযথ প্রস্তুতি সম্ভব নয়। অন্যদিকে পরীক্ষা শুরুর সময় দেওয়া হয়েছে দুপুর ১টা থেকে। এ পরীক্ষা বিকেল ৫টা নাগাদ চলবে। এদিন পরীক্ষা শেষ করে বাসায় ফিরতেই রাত হয়ে যাবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত রুটিন সংশোধনের দাবি জানিয়ে আজহার মাহমুদ বলেন, এ পরীক্ষা শুধুই পরীক্ষা নয়, এটা আমাদের ভবিষ্যতের প্রশ্নের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং এ রুটিন পরিবর্তন করে পরীক্ষার মাঝে ছুটি বাড়াতে হবে। প্রকাশিত এ রুটিন সংশোধন করে নতুন রুটিন প্রকাশ করতে হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সালের অনার্সের এ সেশন হলো ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের। ইতিমধ্যে এক বছরেও বেশি সময় সেশন জটিলতার মধ্যে রয়েছে এ শিক্ষাবর্ষ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব না হওয়ায় এ জটিলতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হচ্ছে না।

জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি। আগে আমরা ছুটির দিনে পরীক্ষা নিয়েছি। কিন্তু এখন বিসিএস শিক্ষক সমিতি ছুটির দিনে পরীক্ষা নিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। সেখানে অনেকগুলো পরীক্ষা বাদ হচ্ছে। এখন আবার যদি এ পরীক্ষায় গ্যাপও বাড়িয়ে রাখি, তাহলে সেশন জটিলতা তৈরি হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ কলেজগুলোর আলাদা পরীক্ষার হল নেই। যেখান ক্লাস, সেখানেই পরীক্ষা। যেকোনো ব্যাচের পরীক্ষা চলাকালে ক্লাস-পরীক্ষা দুইটার সমন্বয় করতে হয়। একদিকে আমাদের ক্লাস-পরীক্ষা চলমান রাখতে হয়, অন্যদিকে সেশন জটিলতা কমিয়ে আনার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। আবার যারা পরীক্ষা নেবেন, সে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া আমাদের মূল্যায়ন করতে হয়। এতে করে কোনো না কোনো দিকে ছাড় দিতেই হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence