হাসিবুর রহমান © সংগৃহীত
সদ্যই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জুলাইযোদ্ধা হাসিবুর রহমান। জানা গেছে, আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। ছাত্রদলের একাধিক নেতা এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তাকে ভিপি প্রার্থী করে প্যানেল ঘোষণা করার চিন্তা-ভাবনাও ছিল। তার অকাল মৃত্যুতে শোকাহত হয়ে পড়েন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে আকস্মিকভাবে মারা যান জবি ছাত্রদল নেতা হাসিব। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ক্যাম্পাসে। তাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন শিক্ষক ও সহপাঠীরা। তার জানাজায় উপস্থিত হয়ে শোক প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ও ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমসহ শাখা ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: হোটেলে খেতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই ছাত্রদল নেতার মৃত্যু
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির একাধিক নেতা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আসন্ন জকসুতে হাসিবুর রহমানকে ভিপি প্রার্থী করে প্যানেল দেওয়ার চিন্তা ছিল তাদের। আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, এখন আর আমাদের কোনো ভাষা নেই। তার জন্য আমরা দোয়া চাই।’
হাসিবুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলায়। তার বাবা চরফ্যাশন উপজেলার একটি ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শুক্রবার রাতে হাসিবুর অসুস্থ হয়ে পড়ার সময় তার সঙ্গীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের সঙ্গে পুরান ঢাকার স্টার কাবাব রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে হাসিবুর অসুস্থ বোধ করেন এবং বলেন ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না, আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।’ পরে তাকে পানি দেওয়া হয়। পানি নেওয়ার আগেই তিনি নিচে টলে পড়ে যান। এমন পরিস্থিতিতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। সেখানে ইসিজি করে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তার মৃত্যু খবর পাওয়ার পরপরই সহপাঠী, বন্ধু, শিক্ষক, বিভিন্ন সংগঠনের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। পরে এদিন রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তারা প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এখান থেকে তার গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশনে নেওয়া হয়। আজ শনিবার সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে।
ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন হাসিব। রাজধানীর মিরপুরে আন্দোলন সংগঠিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখেন। পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নেন। জবি সবশ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগত্য ছিল।