রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাতে হুমকি দিয়ে সকালে শিক্ষার্থীকে বের করে দিল ছাত্রলীগ

রাবির শের-ই-বাংলা হল
রাবির শের-ই-বাংলা হল  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এক শিক্ষার্থীকে রাতে হল ছাড়ার হুমকি দিয়ে সকালে বের করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আকিব জাভেদ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শের–ই–বাংলা হলের ১২৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রাতুল। তিনি শের–ই–বাংলা হল ছাত্রলীগের সভাপতি পদে আছেন।

জানা যায়, গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা রাতুল ঐ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জাভেদকে সিট ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হল থেকে জাভেদের জিনিসপত্র বের করে দিয়ে কমল কুমার পাল নামের এক শিক্ষার্থীকে সেই সিটে তুলে দেন। কমল ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীর। তার আবাসিকতা নেই।

ভূক্তভোগি শিক্ষার্থী আকিব জানান, গতকাল রাত ১২টার দিকে হল ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান আমার রুমে আসে এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আজ সকাল ৯টার মধ্যে রুম ছেড়ে চলে যেতে আলটিমেটাম দিয়ে যান।

তিনি জানান, আজ সকালে এসে মোস্তাফিজুর আবার আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আরো সাত-আট জন মিলে আমার বইপত্রসহ সব জিনিস বাহিরে ফেলে দেন। কিন্তু আমার কোন যাওয়ার জায়গা নেই। এমতাবস্থায় আমি অনিরাপত্তাবোধ করছি।

ঘটনাটি হলের প্রাধ্যক্ষকে জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকালে প্রাধ্যক্ষ স্যার এসে ঘটনাটি শুনেছেন এবং আমাকে একটি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু আমি আমার বরাদ্দকৃত রুমে থাকতে চাই বলে জানান এ শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুন- আপত্তিকর ছবি তোলাসহ দশ অভিযোগ ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে 

হল সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারির প্রথম দিকে আবাসিকতার জন্য আবেদন নেয় হল প্রশাসন। তারপর মৌখিক পরীক্ষা হয় ফেব্রুয়ারিতে। মার্চের প্রথমে হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে ১২৯ নম্বর কক্ষে ওঠেন আকিব। ওই বেডে ২০১৫-১৬ সেশনের এক শিক্ষার্থী আরও এক মাস ছিলেন। পরে তিনি ৮ এপ্রিল চলে যান। পরে এই বেডে ওঠেন আকিব।

জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি কাউকে হল থেকে বের করে দেয়নি। আকিব নামের ছেলেটি অন্য এক রুমে বেড শেয়ার করে থাকতেন। ১২৯ নম্বর রুমে আশিক নামের এক ছেলে থাকতেন সে চলে যাওয়ার পর হঠাৎ আকিব এই রুমে চলে আসেন। এদিকে রুমে থাকা আশিক যাওয়ার পর সিনিয়রের ভিত্তিতে ওই সিটে কমল থাকবেন বলে নিশ্চিত করা হয়।

তার তোষকপত্র বের করে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আকিব যে হলে অবস্থান করছেন সেটা হল প্রাধ্যক্ষও জানেন না। আমি তার জিনিসপত্র বের করে দেয়নি হয়তো যে তার সিটে উঠেছে (কমল) সে তার জিনিসপত্র বারান্দায় রাখতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ মো. হবিবুর রহমান বলেন, আজ সকালে বিষয়টি জেনে সেখানে গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলেছি। সব শুনে আপতত তাকে অন্য একটি রুমে থাকার ব্যবস্থা করেছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি, খুব দ্রুতই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এছাড়া প্রাধ্যক্ষ জানান, গতকাল এমন ঘটনা ঘটেছে কিন্তু সে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রশাসনকে কিছুই জানায় নি। এমনকি সে হলে উঠেছে সেটাও জানেনা কর্তৃপক্ষ। তবে তার ওই সিট বরাদ্দ রয়েছে। তাছাড়া একজন শিক্ষার্থী কেউ রুম থেকে বেন করে দেয়ার এখতিয়ার রাখে না। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে বিশ্ববদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া জানান, আবাসিক কোন শিক্ষার্থীকে তার সিট থেকে ছাত্রলীগ কর্মী বের করে দিয়েছে এমন ঘটনা সম্পর্কে এখনো অবগত হয়নি। তবে এমন কোন ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তবে অবশ্যই সেবিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। কেননা ছাত্রলীগের কোন কর্মী এমন ঘটনা ঘটাতে পারেনা বলে জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence