সেনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:৩৬ PM , আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:৩৬ PM
বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার সেনা কর্মকর্তা মো: হাবিবুর রহমানকে সন্ত্রাসীদের নৃশংস হত্যা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নৃশংস তাণ্ডবের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদ।
আজ ৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় তারা অতি দ্রুত একটি সম্মিলিত বাহিনী গঠন করা এবং হাবিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডসহ সকল হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেন।
মানববন্ধনে চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সভাপতি মিনহাজ তৌকি বলেন, তারা শুধু হাবিবুর রহমানকে হত্যা করেনি তারা এটা দিয়ে তাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার জানান দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চারবার পার্বত্য চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন সমস্যা সমাধানের জন্য, তাদের নেতাদের সাথে বৈঠক করেছিলেন। এছাড়া এরশাদ ও জিয়া সরকারও তাদের সাথে আলোচনা করেছিলেন। কিন্তু তারা সঠিক পথে আসেনি। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে তাদেরকে সঠিক পথে আনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তিতে বাঙালি জাতিকে বঞ্চিত করা হয়েছিল যা সেদিন বাঙালি বোঝেনি।
তিনি বলেন, এনজিও সংস্থা, মিশনারি প্রতিষ্ঠান ও জনহিতকর কাজের নামে ধর্মান্তরিত করা বন্ধ করুন। ছদ্মবেশে ধর্মপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না। পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্প যখন বিকশিত হচ্ছিল এই উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা সেসব স্থানে আক্রমণ করে। আজকে সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি না দিয়ে সরকার তাদেরকে বাঘের মুখে ফেলে দিয়েছে। আমরা চাই অতি দ্রুত একটি সম্মিলিত বাহিনী গঠন করা হোক এবং হাবিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডসহ সকল হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করা হোক।
সাংগঠনিক সম্পাদক এহসান ফরহাদ বলেন,যখন শান্তিচুক্তি হয়েছিল তখন আমরা ভেবেছিলাম এখন থেকে এই পাহাড়ি এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু আমরা কি দেখতেছি চাকমা, মারমা যেই হোক না কেন এখন কেউ নিরাপদ না। যারা নিরাপত্তা দিবে তারাই অনিরাপদ। তাহলে আমাদের কি হবে এটা বোঝেন।শিক্ষা, চিকিৎসা,চাকরি সব দিক দিয়েই এখানে বৈষম্য রয়েছে। আমরা একটি নিরাপদ পাহাড় চাই। যেখানে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারব।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদিক কাইয়ূম বলেন, জেএসএস পাহাড়ে সন্ত্রাসী ব্যবস্থা চালু করেছে। কোন কাজ করতে গেলেই তাদেরকে চাঁদা দিতে হয়। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই ক্রসফায়ার করে মেরে ফেলা হয়।তারা বছরে সাড়ে চারশ কোটি টাকার চাঁদাবাজি করে। তাদের লক্ষ্য এখানে একটি আলাদা রাষ্ট্র কায়েম করা। আমরা সরকার ও দেশের সাধারণ জনগণের প্রতি অনুরোধ করব এদের থামানোর এখনই সময়। তাদের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমরেড এস কে জাফর বলেন, আজকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসেও যদি আমাদের মানববন্ধন করতে হয় এর চেয়ে আর দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।আমরা বাংলাদেশের মধ্যে সব জায়গায় সমান অধিকার চাই। দুই নীতি চাই না। ইউপিডিএফ এবং জেএসএস এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে সন্ত লারমা একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রধান হয় কিভাবে মন্ত্রীর সম মর্যাদা পায়।আমি চাই ইউপিডিএফ এবং জেএসএস এর প্রধান এই সন্ত লারমাকে বিচারের সম্মুখীন করা হোক।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে রুমা জোনের একটি টহল দলের সঙ্গে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে আগমন করবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়ার ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি নিরাপত্তা টহল দল রাত ১০টায় সেখানে যায়। সেখানে পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাতারি গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন। এসময় আরও এক সেনাবাহিনীর সৈনিক আহত হন। মারা যান তিন সন্ত্রাসী।