গেস্টরুম বন্ধের খুশিতে পোস্ট, ৩ ছাত্রকে ছাত্রলীগের মারধর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

গেস্টরুম বন্ধ হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় মারধরের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলের তিন শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) রাত ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।

মরধরের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন- প্রথম বর্ষের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র রুবেল হোসেন, ইমন এবং আল আমিন। 

আর মারধরকারী শিক্ষার্থীরা হলেন- জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী লালন হোসাইন, মার্কেটিং বিভাগের আরিফুল ইসলাম আরিফ ও আসিফ হোসাইন এবং মিউজিক বিভাগের ওয়াজিদ তাওসিফ।

অভিযুক্তরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের অনুসারী। আর হলের অভ্যন্তরে তারা হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাজুর ছোটভাই হিসেবে পরিচিত। 

জানা যায়, সম্প্রতি স্যার এ এফ রহমান হলে রবিউল ইসলাম নামে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর সমালোচনার মুখে হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সাজু ওই হলে গেস্টরুম বন্ধের নির্দেশ দেন। সেই সংবাদ শুনে গতকাল ফেসবুকে ‘ঈদ মোবারক’ ও ‘আলহামদুলিল্লাহ’ লিখে পোস্ট দেন মারধরের শিকার তিন শিক্ষার্থী।  

এ ঘটনার পরে প্রথম বর্ষের সবাইকে পুনরায় গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মীরা। পরে তাদের মধ্য থেকে রুবেল হোসেন, ইমন ও আল আমিনকে সিনিয়ররা বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হলের প্রথমবর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, ছাত্রলীগ নেতা সাজু গেস্টরুম বন্ধের নির্দেশ দেয়ার পরে খুশি হয়ে ইমন, রুবেল ও আল-আমিন ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপরে রাত ১০টায় তাদের বর্ষের সবাইকে গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে প্রথমে গালাগালি করে। পরে ছাত্রলীগ নেতা লালন হোসাইন প্রথম বর্ষের কয়েকজনকে চড় মারেন। তারপর বাকিদের বের করে দিয়ে আল আমিন, রুবেল ও ইমনকে রাত ১২টা পর্যন্ত মারধর করেন অভিযুক্তরা।

আরও পড়ুন:  ঢাবিতে এসে হামলার শিকার সিলেটের ছাত্রলীগ নেতা

                      ঢাবি’র হলে শিক্ষার্থীদের পেটাল ছাত্রলীগ

জানতে চাইলে অভিযুক্ত লালন হোসাইন বলেন, আমাদের হলে এ ধরনের ঘটনা কখনও ঘটেনি। আপনারা ইনভেস্টিগেশন করুন, তাহলে ঘটনার সত্যতা জানতে পারবেন।

অপর অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আমাদের হলে এ রকম কোন ঘটনা রাতে ঘটেনি। আপনারা চাইলে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। এ রকম ঘটনা আমাদের হলে অসম্ভব। 

মারধরের বিষয়ে হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাজু বলেন, আমি এই বিষয়টি জানতাম না। কিছুক্ষণ আগেই এ সম্পর্কে জেনেছি। কেন তারা এটি করলো তা আসলে আমি বুঝতে পারছি না। আমি সবার সাথে বসেছিলাম, প্রথম বর্ষের কেউই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছে না। আবার দ্বিতীয় বর্ষের কেউও এসব স্বীকার করতে চাচ্ছে না। আমরা তবুও সবাইকে সাবধান করে দিয়েছি যাতে এ রকম ঘটনা আর না ঘটে।  

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমি ঘটনাটা শুনেছি, ছাত্রলীগের কেউ যদি নীতিবিরোধী ও সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোন কাজ করে তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। 


সর্বশেষ সংবাদ