রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বাতিলে বাড়তি টাকা গুনছে শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ভর্তি বাতিল হলেও ভর্তি বাবদ দেয়া টাকা ফেরত দেয় না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ১০০০ টাকা করে ভর্তি বাতিল ফি নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ইউনিটের ভর্তি বাতিল করে অন্য ইউনিটে ভর্তি হচ্ছেন তাদেরও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি বাতিল ফি কমিয়ে ১০০০ করা হয়েছে। এর আগে এ খাতে ২০০০ করে ফি নেয়া হতো। রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফজলুল হক এসব তথ্য জানান।

অধ্যাপক ফজলুল হক বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিল করলে ভর্তি বাবদ দেয়া ফি ফেরত দেয় না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বরং উল্টো আরও ২০০০ হাজার টাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বরাবর ব্যাংকে জমা দিতে হয়। এরপর ওই শিক্ষার্থী উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভর্তি বাতিল ফর্মে সভাপতির স্বাক্ষর নিতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনের স্বাক্ষর নিয়ে ভর্তি বাতিল করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা এক ইউনিটের ভর্তি বাতিল করে অন্য ইউনিটে ভর্তি হচ্ছে, তাদেরকে অনুষদ পরিবর্তন ফি ১ হাজার ২০ টাকা ও বিভাগ উন্নয়ন ফিসহ বেশ কিছু খাতে আরও ৫০০-৬০০ করে দ্বিতীয়বার এই টাকা দিতে হচ্ছে। ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি বাতিল ফি কমিয়ে ১ হাজার করা হয়েছে। এর আগে এ খাতে ২ হাজার টাকা ফি নেয়া হতো।’

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ২০২০-২১ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা। তানবীর আহমেদ নামে একজন এবার সি ইউনিট থেকে কেমিস্ট্রি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় রাবিতে ভর্তি বাতিল করবেন তিনি।

তানবীর বলেন, ‘আমাদের ভর্তি ফি তো ফেরত দেবে না। উল্টো আমাদের কাছ থেকে আরও ১ হাজার টাকা ভর্তি বাতিল ফি নিচ্ছে। এই অতিরিক্ত টাকাটা না নিলেও পারত। আমার জানা মতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বাতিল ফি নিচ্ছে না।’

বাকি বিল্লা নামে আরেকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের এ ইউনিটের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে ভর্তি বাতিল করে বিজনেস অনুষদের বি ইউনিটের ফাইন্যান্স বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। এতে তাকে বিজনেস অনুষদ পরিবর্তন ও উন্নয়ন ফি হিসেবে ১ হাজার ৫২০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়েছে। একই খাতে কলা অনুষদেও ১ হাজার ৭০০ টাকা দিতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাকাডেমিক সেকশনের ডেপুটি রেজিস্ট্রার এএইচএম আসলাম হোসাইন বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো একটি ইউনিটে ভর্তি হওয়ার পর তা যদি বাতিল করে অন্য ইউনিটে চলে যেতে চায় তাহলে তাকে এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার কোনো ফি দিতে হবে না। তবে অন্যান্য কাজে ৪০০-৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।’

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম জানান, কেউ ভর্তি বাতিল করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তা কার্যকর হবে। ব্যাংকে লেনদেন থাকলে সেটা সম্পন্ন করে প্রথমে ওই শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমতিপত্র পূরণ করবে। তারপর অ্যাকাডেমিক সেকশন বিষয়টি দেখবে। এরপর সংশ্লিষ্ট অনুষদ থেকে তার ভর্তির কাগজপত্র তুলে নিতে পারবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘কেউ এক ইউনিট থেকে অন্য ইউনিটে গেলে ওই বিভাগের উন্নয়ন ফিসহ বেশ কিছু খাতে অতিরিক্ত কিছু টাকা জমা দেয়া লাগে। এর বাইরে আর কোনো খাতে টাকা লাগে বলে আমি জানি না। ভর্তি বাতিল ফি কমানো বা এটি না নেয়া যায় কি না সেটা আমরা আলোচনা করব। আর যদি অতিরিক্ত কোনো খাতে টাকা নেয়া হয়, সেটাও দেখব।’


সর্বশেষ সংবাদ