রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যাম্পাসে সরব ছাত্র সংগঠনগুলো, শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রত্যয়

ক্যাম্পাসে সরব ছাত্র সংগঠনগুলো, শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রত্যয়
ক্যাম্পাসে সরব ছাত্র সংগঠনগুলো, শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রত্যয়  © ফাইল ছবি

করোনার দীর্ঘ ছুটি শেষে আবারো ক্যাম্পাসে ফিরেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠনগুলো। সাংগঠনিক কর্মসূচির বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে তাদের পাশে থাকায় প্রত্যয় সংগঠনগুলোর নেতাদের। নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নতুনরূপে নিজেদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও শুরু করতে চান তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের পরিবহন মার্কেট ও টুকিটাকি চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায় মিলিত হয়ে মতবিনিময় ও চা-আড্ডা করছেন নেতাকর্মীরা। তাছাড়া ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ায় সকল নেতাকর্মী ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। ফলে সাংগঠনিক কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মিছিল, মিটিং ও মানববন্ধনও করেছেন ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।

করোনার দীর্ঘ বিরতি শেষে ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে আবার কিভাবে তাদের কার্যক্রম শুরু করবে, শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের কি ধরনের কর্মসূচি থাকবে এসব বিষয় নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রঞ্জু হাসান জানান, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক সাংগঠনিক তেমন কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু এখন যেহেতু ক্যাম্পাস খুলেছে, আমরা সাংগঠনিক বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেব।

তিনি বলেন, বিশেষ করে করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। যাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর হয়ে উঠেছে। অথচ আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি হলে অবৈধভাবে সিট দখল করে এমন অনেক শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা হয়। এমনটি যেন এবার না হয়, সে বিষয়ে আমাদের সংগঠন কাজ করবে।

শিক্ষার্থীদের যেকোন যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী সোচ্চার জানিয়ে এ নেতা বলেন, হলগুলোতে খাবারের গুণগত মান উন্নত করার পাশাপাশি যথাসম্ভব সল্পমূল্যে যেন পরিবেশ হয়, সে বিষয়েও কর্মসূচি হাতে নেব।

রঞ্জু হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ঘরবন্দী থেকে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আনতে প্রশাসন ও সাংস্কৃতিক জোটের সমন্বয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের আয়োজন করবো। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনে উৎফুল্লতা ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু জানান, করোনার দীর্ঘ ছুটির মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে পাশে থেকেছে।

তিনি বলেন, যেহেতু দীর্ঘছুটির পর আবার বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছে, সুতরাং সাংগঠনিক সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি সংগঠনের সার্বিক কাজের গতি ফেরাতে দ্রুতই হল সম্মেলনের কথা ভাবছি। এ বিষয় কেন্দ্র সংগঠনের সাথেও কথা হয়েছে, খুব দ্রুতই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন হল কমিটি ঘোষণা করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী জানান, ছাত্রদল বিগত সময়েও শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল। বর্তমান যেকোন সমস্যায় কিংবা যৌক্তিক আন্দোলন শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে সংগ্রাম করে যাবে।

তিনি বলেন, করোনার দীর্ঘ ছুটিতে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ছাত্রদল বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এছাড়া ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের যেকোন যৌক্তিক দাবিদাওয়া পক্ষে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সুষ্ঠু সমাধান করার চেষ্টা চালিয়েছে। সুতরাং আমরা আছি।

রাহী আরও জানান, দীর্ঘদিন পর আবার ক্যাম্পাস খুলেছে। তাই সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করাসহ হল সম্মেলনের কথাও ভাবা হচ্ছে। খুব দ্রুতই পরিশ্রমী, ত্যাগি ও সৎ-সাহসী নেতৃত্বের মাধ্যমে হল কমিটি ঘোষণা করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে খুললো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এতদিন পরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে যেন কোন ধরনের হয়রানির বা সমস্যার শিকার না হয়, সেজন্য সর্বদা তৎপর থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশন। তাছাড়া ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যেকোন সমস্যার সমাধানে কাজ করা হবে।

তিনি বলেন, ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য একটা অভিযোগ সেল গঠন করা হবে। যেখানে শিক্ষার্থীদের পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।

সংগঠনটির নতুন কমিটির কথা জানিয়ে মোহাব্বত আরও জানান, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাস কেন্দ্রীক কাজে কিছুটা ব্যঘাত ঘটলেও এখন তা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থের রাজনীতিকে বিকশিত করার প্রচেষ্টায় ছাত্র ফেডারেশন আগামী ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ নতুন কমিটি ঘোষণা করতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ