‘বেটার’ গণরুম নিয়ে খুলছে জাবির হল
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২১, ০৭:৪৯ AM , আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২১, ০৮:১৭ AM
করোনা মহামারীতে প্রায় দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আজ খুলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হল। দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও গণরুমের বোঝা কাধে নিয়েই খুলতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। তবে তারা দাবি করেছেন, এই গণরুম আগের মত হবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীকে রাখা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি আবাসিক হলে আসন রয়েছে ৮ হাজার ২৭৮টি। এর বিপরীতে মোট শিক্ষার্থী ১২ হাজার ৯২১ জন। ফলে অংকের হিসাবে ৪ হাজারের বেশি আসন সংকট নিয়ে খুলতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল। তবে কিছু বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করায় প্রায় ৭০০টি আসন খালি হবে।
আবাসন সংকটের কথা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ আমরা চেষ্টা করেছি যাতে গণরুম না থাকে। যেহেতু ৪৪তম ব্যাচের সব বিভাগের স্নাতকোত্তর সম্পন্ন হয় নি তাই ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এখনই আসন না দেয়া গেলে গণরুমে রাখা হবে। তবে এটা হবে ‘বেটার গণরুম’ যা কখনোই আগের মত হবে না। এখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীকে রাখা হবে।
অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চলমান আবাসিক হলগুলোর কাজ শেষ হলে আবাসন সংকটের স্থায়ী নিরসন হবে বলে জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নুরুল আলম বলেন, আমরা কখনোই চাই না গণরুম থাক। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণরুমে রাখতে পারলে তাতে সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১৪টি বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এতে প্রায় ৭০০ আসন খালি হবে। ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের খালি হওয়া আসনে ওঠানো হবে।
যেহেতু এখনই ৪৮তম ব্যাচের সবাই হলে আসবে না তাই গণরুমের প্রয়োজন থাকবে না। পাশাপাশি, নির্মাণাধীন ছয়টি আবাসিক হল চালু হলে গণরুম সংকট শেষ হবে বলে জানান তিনি।
তবে গণরুমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের রাখা অসম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা ডাক্তার শামছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গণরুম না রাখার বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। তবে সেটা কতটুকু আমলে নেওয়া হচ্ছে সেটা একটা ব্যাপার। গণরুম রাখার ফলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। পাশাপাশি কোনো শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত হলে প্রতিটা হলভিত্তিক যাতে আলাদা আইসোলেশন রুম রাখা হয় সে প্রস্তাবও রেখেছি।'
এব্যাপারে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল গণরুম রাখা হবে না। আমরা সে সিদ্ধান্তকে সাধুবাদও জানিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শুনতে পাচ্ছি উল্টো কথা। এত সময় পেয়েও গোঁড়ায় গলদ ঘটানোটা বড্ড বেমানান। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকটি বিবেচনায় রেখে গণরুম না রাখার বিষয়টি নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারত প্রশাসন। অথচ এখন গণরুমে স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব মানার উদ্ভট আলাপও তুলে আনছে তারা।’