ঢাবিতে পিএইচডি থিসিস মূল্যায়নে কোনো সফটওয়ার ব্যবহার হয় কিনা: হাইকোর্ট

  © ফাইল ফটো

আবেদনকারীদের জমা দেওয়া পিএইচডি থিসিস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে সংরক্ষণ করে এবং তা মূল্যায়নে কোনো সফটওয়ার বা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় কিনা তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। আগামী দুই মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তা জানাতে বলা হয়েছে।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিঙ্কন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি দেওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে গত বছর জানুয়ারিতে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের পিএইচডি গবেষণার ৯৮ শতাংশ নকল’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর যুক্ত করে পিএইচডি থিসিস অনুমোদনের আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র (এনওসি) নেওয়া বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা চেয়ে আবেদনটি করা হয়। পরে রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত বছর ৪ ফেব্রুয়ারি রুলসহ আদেশ দেয়।

চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে তৈরি অভিসন্দর্ভের উপর কোনো গবেষক বা শিক্ষার্থীকে পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি না দেওয়ার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে অভিসন্ধর্ভের চৌর্যবৃত্তি চিহ্নিত করার জন্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ নিয়োগের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি পিএইচডি ও সমমানের ডিগ্রি প্রদানের ক্ষেত্রে কিভাবে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ করা হয় কিনা তা তিন মাসের মধ্যে জানাতে বলা হয়। 

সে আদেশের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউজিসি প্রতিবেদন দেয়। সে প্রতিবেদনের উপর শুনানি শেষে আদেশ দিল আদালত।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম লুৎফুল কবীর যে গবেষণাপত্র জমা দিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন, সেটির ৯৮ শাতাংশ নকলের অভিযোগ ওঠে।

“এই অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মহামান্য হাইকোর্ট। যথারীতি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আমরা সময় চেয়েছিলাম, সময় বাড়িয়ে দিয়েছেন। দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। এছাড়া ইউজিসিও প্রতিবেদন দিয়েছে। সে প্রতিবেদন দেখে আদালত আদেশ আজ আরেকটি নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।”

ইউজিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ স্বীয় আইন, বিধি, প্রবিধি, সংবিধি ও নীতিমালা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এমফিল ও পিএইচডিসহ উচ্চতর ডিগ্রি প্রদান করা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই।

আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যলয়ের ব্যপারে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে সরকার অনুমোদিত ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তন্মধ্যে ৯৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কমিশন থেকে অদ্যাবধি কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচডি গ্রোগ্রাম পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ