চাকসুর ভোটগ্রহণ পাঁচ অনুষদ ভবনে, কোন কেন্দ্রে কত ভোটার
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৮ AM , আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৪ AM
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে প্রচারণা। আগামীকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের মোট ৬০টি কক্ষে ১৫টি হলের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৯০৭ জন প্রার্থী এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ৪১৫ জন, হল ও একটি হোস্টেল সংসদে ৪৯২ জন। কেন্দ্রীয় সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৮ জন নারী প্রার্থী ও ৩৬৬ জন পুরুষ প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫১৭ জন। এরমধ্যে ছাত্র ভোটার ১৬ হাজার ৮৪ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৪৩৪ জন।
এক ভোটার মোট ৪০টি ভোট প্রদান করবেন। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ২৬টি ও হল সংসদে ১৪টি। চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, ব্যালটে ভোট হবে। গণনা হবে ওএমআর পদ্ধতিতে। একজন ভোটারের ৪০টি ভোট দিতে আনুমানিক ১০ মিনিট সময় লাগতে পারে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। ভোটাররা যত সময় প্রয়োজন মনে করবেন, তত সময় নিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
কোন কেন্দ্রে কত ভোটার
প্রকৌশল অনুষদে (আইটি) সোহরাওয়ার্দী হলের মোট ৪ হাজার ৩৬ জন ভোট দেবেন। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নতুন ভবন শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ভবনে ভোট দেবেন ৫ হাজার ২৬৩ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহজালাল হলের ২ হাজার ৬৬৬ জন, এএফ রহমান হলের ১ হাজার ৩০৭ ও আলাওল হলের ১ হাজার ২৯০ জন ভোটার রয়েছেন। বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৫৩৮ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শাহ আমানত হলের ২ হাজার ২৪৭ জন, শহীদ আবদুর রব হলের ১ হাজার ৭৭৫ ও মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ৫১৬ জন।
এছাড়াও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভবনে ভোট দেবেন ৬ হাজার ৬০৬ শিক্ষার্থী। যার মধ্যে নবাব ফয়জুন্নেছা হলের ১ হাজার ১৭৯ জন, শামসু্ন্নাহার হলের ২ হাজার ২৯১, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলের ২ হাজার ৪৮৭ ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের ৬৪৯ জন। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনে ভোট দেবেন মোট ৭ হাজার ৭৩ শিক্ষার্থী। যার মধ্যে প্রীতিলতা হলের ২ হাজার ৫৫৫ জন, বিজয় ২৪ হলের ২ হাজার ৬০৪, শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের ১ হাজার ৭৬০ ও শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের ১৫৪ জন।
আরও পড়ুন: ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ গঠনের দাবি শিবির সমর্থিত প্যানেলের
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৬০টি কক্ষের প্রতিটিতে গড়ে ৪০০-৫০০ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিটি অনুষদ ভবনের ডিনকে রিটার্নিং অফিসার এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে শিক্ষার্থী ছাড়া বহিরাগত কেউ ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন না।
ভোট গণনার ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, দুই ধাপে হবে ভোট ঘোষণা—একটি ধাপ পরিচালনা করবে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান এবং অন্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল। ভোট গ্রহণ শেষে প্রতিটি কেন্দ্রে তাৎক্ষণিকভাবে গণনা হবে এবং কেন্দ্র থেকেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। হলের ফলাফলও একইভাবে প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অডিটোরিয়ামে।
কোনো ধরনের অপ্রিয়কর ঘটনা এড়াতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে, যারা প্রয়োজনে তিন মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবে।
আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি প্রবেশপথে প্রতিদিন টহল দিচ্ছে দুইটি করে টহল টিম। বহিরাগতদের প্রবেশেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম যৌথভাবে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করবে। ৫টি ভবনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া কোনো নিরাপত্তাকর্মী কাউকে ভবনে প্রবেশ করতে দেবে না।