রাবিতে দ্বিতীয় দিনেও অচলাবস্থা কাটেনি, ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪৬ PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দ্বিতীয় দিনের মতো তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করছেন। আর ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। এতে অচলাবস্থা দেখা দেওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়ে বাসায় চলে গেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় এ শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রশাসন ভবনের পশ্চিম পাশে চেয়ার পেতে বসে আছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। প্রশাসন ভবনে বেশিরভাগ দপ্তরে তালা ঝুললেও কিছু কিছু অফিস খোলা রয়েছে। সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়-২৪ হলে গিয়ে দেখা যায়, অনেকে অফিসে এসেছে। তাদের দৈনন্দিন কাজ করছেন তারা। এছাড়া পরিবহন মার্কেট, টুকিটাকি চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, কিছু কিছু শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসছেন।
বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে চেয়ার পেতে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন ফিসারিজ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত ২০ তারিখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, ডেপুটি রেজিস্ট্রারসহ অনেককে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে কতিপয় শিক্ষার্থী। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব না। শুধু আমরা না, গোটা বাংলাদেশের শিক্ষকেরা আজ স্তম্ভিত। যতক্ষণ পর্যন্ত এটার সুষ্ঠু বিচার না হচ্ছে ততক্ষণে আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
এ সময় অ্যাকাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্টার আবু মো. তারেক বলেন, ‘আমাদের দাবি সুস্পষ্ট, আমাদের উপ-উপাচার্য লাঞ্ছিত হয়েছেন। সেটার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আমরা কোনোভাবেই কাজে ফিরে যাব না।’
আরও পড়ুন: ক্লাস, পরীক্ষা, গবেষণা— সব চাপে কুলহারা শিক্ষকরা, তবুও নেই ‘টিএ’ নিয়োগের উদ্যোগ
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল ক্যাম্পাসে। প্রার্থীরা নানা কৌশলে প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। এর মধ্যে সে দিন সন্ধ্যায় বাতিল হয়ে যাওয়া পোষ্য কোটা ১০ শর্তে ফিরিয়ে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে রবিবার শিক্ষক-কর্মকর্তারা লাঞ্ছিতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে এক দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করে। গতকাল থেকে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে সভা শেষে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম। অফিসার সমিতি সংবাদ সম্মেলন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ ঘোষণা দেন। রাতে আবারও জাতীয়তাবাদী শিক্ষকেরা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে জানান।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল বিকেল ৫টায় রাকসু নির্বাচন কমিশনার জরুরি সভা করে নির্বাচনের তারিখ পেছান। আগামী মাসের ১৬ অক্টোবর ভোট ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।