ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সিন্ডিকেটের আওয়ামীপন্থী ৯ সদস্যের সদস্যপদ চালিয়ে না যাওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সম্মতি

ঢাবি
ঢাবি  © লোগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সদস্যদের মধ্যে আওয়ামীপন্থী ৯ জনের সদস্যপদ চালিয়ে না যাওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টি আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

সিন্ডিকেটের ওই ৯ জন সদস্য হলেন- ঢাবির বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক মো. আবদুস ছামাদ, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সাবেক প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূইয়া, লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শরিফ উল ইসলাম, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহিন মোহিদ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম বাহালুল মজনুন, সাবেক প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার ও আওয়ামীপন্থী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের আলোকে সিন্ডিকেটের ৯ জন সদস্যের সদস্যপদ চালিয়ে না যাওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়। ওই প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর এসব সদস্যদের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের তীব্র আপত্তি ছিল। তাছাড়া সিন্ডিকেটে তাদের রাখা হলে এক ধরনের ঝুঁকিও থেকে যায়। তাই তাদের সদস্যপদ চালিয়ে না যাওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সম্মতি দিয়েছেন। এখন সিন্ডিকেটের সভায় তাদের আর রাখা হবে না।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে মোট ১৮টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি ক্যাটাগরিতে (ডিন, প্রাধ্যক্ষ, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক) শিক্ষকেরা সরাসরি ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ওই ছয়টি ক্যাটাগরিতে জিতেছেন আওয়ামীপন্থীরা।

তবে উপাচার্য এবং দুই উপ-উপাচার্য পদাধিকারবলে সদস্য মনোনীত হন। এছাড়া বাকি পদগুলোয় রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট, অ্যাকাডেমিক পরিষদ, আচার্য, সরকার কর্তৃক মনোনীত হয়ে থাকেন। সে সময় এসব পদগুলোও আওয়ামীপন্থীদের দখলে ছিলেন।

গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর সিন্ডিকেটে পদাধিকারবলে উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্য এবং নতুন ৬ সদস্য যুক্ত হওয়ার পরও এতে ১৮ জনের মধ্যে ৯ জনই আওয়ামী লীগপন্থী ব্যক্তিবর্গ ছিলেন। পরবর্তীতে তাদের অপসারণ চেয়ে শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় কর্মসূচি পালন করেন।

গত জানুয়ারির শুরু দিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালে এই ৯ জনের মধ্যকার পাঁচজনের সদস্যপদ সম্প্রতি বাতিলের সুপারিশ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ রিভিউ কমিটি। তারা হলেন- অধ্যাপক মো. আব্দুস ছামাদ, অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমান, অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শরিফ উল ইসলাম এবং সহযোগী অধ্যাপক মাহিন মোহিদ।

কারণ হিসেবে তখন বলা হয়েছিল, তারা যে পদবির ক্যাটাগরিতে সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমানে তাদের আর সেই পদ নেই। এ ছাড়া সে সময় রামেন্দু মজুমদার পদত্যাগ করেছিলেন। এদিকে, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর গতমাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি আচার্য ও রাষ্ট্রপতির কাছে আওয়ামীপন্থী এই ৯ সদস্যের সদস্যপদ চালিয়ে না যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চাওয়া হলে সম্প্রতি এই সম্মতি দেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ