ঢাবির সংগ্রহশালায় শহীদ আবু সাঈদ-ওয়াসিম-মুগ্ধ-ফাইয়াজের জামাকাপড় ও ব্যবহৃত জিনিসপত্র

শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম, মুগ্ধ ও ফাইয়াজ
শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম, মুগ্ধ ও ফাইয়াজ  © টিডিসি সম্পাদিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালায় সংরক্ষণের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ মো. আবু সাঈদ মিয়ার শহীদ অবস্থায় পরনে থাকা প্যান্ট ও দ্বিতীয় শহীদ মো. ওয়াসিম আকরামের প্যান্ট, পাঞ্জাবি এবং তার পঠিত একটি বই ও ছবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ছাড়া সংগ্রহশালায় সংরক্ষণের জন্য শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ এবং শহীদ মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়ার (ফারহান ফাইয়াজ) ব্যবহৃত জিনিসপত্র হস্তান্তরও করা হয়েছে।

আজ রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপাচার্য অফিস-সংলগ্ন সভাকক্ষে শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে এসব সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক সায়েমা হক বিদিশা (প্রশাসন), প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ (শিক্ষা), কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ।

অন্যদিকে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন তার মা মোছা. মনোয়ারা বেগম ও ভাই। আর শহীদ ওয়াসিমের পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বাবা শফিউল আলম। এ সময় তার বোন সাবরিনা ইয়াছমিন উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা আলহাজ শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং শহীদ মুগ্ধর যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এসব জিনিসপত্র হস্তান্তর করেন।

এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মৃতি রক্ষার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা’ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, জুলাই অভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে একাডেমিক গবেষণা, আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হতাহত ব্যক্তিদের কিছু আর্থিক সহযোগিতা প্রদানেরও চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে ইতোমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারীদের সম্মান জানাতে তাদের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালায় শহীদদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষণের মাধ্যমে শহীদ পরিবারদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে গত ডিসেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে সাময়িকভাবে ‘জুলাই আন্দোলন স্মৃতি সংগ্রহশালা’ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহতদের স্মৃতি রক্ষার্থে তাদের ছবি, ঘড়ি, জুতা, জামাকাপড়, চশমা, বই-খাতা-কলম, ব্যাগ, পরিচয়পত্র, মানিব্যাগ, মোবাইল সেট, লেখা, ডায়েরিসহ ব্যক্তিগত ব্যবহৃত জিনিসপত্র এই সংগ্রহশালায় স্থান পাবে।


সর্বশেষ সংবাদ