বৃক্ষনিধনে মেতেছে বাকৃবি প্রশাসন!

বৃক্ষ নিধন চলছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে
বৃক্ষ নিধন চলছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় বৃক্ষ নিধন চলছে বিরতিহীনভাবে। দিনদিন বেড়েই চলেছে এ কর্মকাণ্ড। একের পর এক বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। তবে গাছ কাটা হলেও লাগানো হচ্ছে না সমতুল্য পরিমাণ বৃক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েস এবং ছাত্র ইউনিয়ন এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করলেও কোনো আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়নি এখনো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ এবং ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ৪ লেনের রাস্তার কাজ করতেই কাটা হচ্ছে এসব বৃক্ষ এমনটিই জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে সুষ্ঠু পরিকল্পনা করলে বিকল্পভাবে উন্নয়ন কাজ ও রাস্তা করা সম্ভব হতো বলেও জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, গত ৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স এন্ড প্লান্ট ব্লিডিং বিভাগের গবেষণাগারের সামনের বড় দুটি রেইন ট্রি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এছাড়া গত ২ মে ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে একটি ল্যাব করার জন্যে প্রায় ৪০ বছরেরও বেশি পুরোনো একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ কেটে ফেলা হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হলে আরেকটি কৃষ্ণচূড়া গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফার্স্ট গেইট থেকে ফসিল পর্যন্ত রাস্তাটির চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পে এই রাস্তার ২ ধারের অনেক পুরোনো কৃষ্ণচূড়া গাছ কেটে ফেলা হয় ।

এছাড়াও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সামনে একটা বড় দেবদারু বৃক্ষ ছিল, সেটা কাটা হয়েছে, তাপসী রাবেয়া হলের সামনে বড় লতা পারুল গাছ কাটা হয়েছে, কৃষি অর্থনীতি অনুষদের সামনে ড্রেন করার সময় ২ টি গন্ধরাজ গাছ কাটা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কমপ্লেক্সের (টিএসসি) সামনের অংশটুকু পাকা করার সময় বড় মে ফ্লাওয়ার গাছ কাটা হয়েছে।

ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া রাস্তার একপাশের গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের  লন্ডন ব্রিজ লেকের পাশে ড্রেন করার জন্য দুটি ফুরুশও গাছ কাটা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পেছনে অপরিকল্পিতভাবে দুইবার ড্রেন করে কাটা হয়েছে ২ টা জারুল ও একটা বড় সজনে গাছ।

বৃক্ষ নিধনের এই মহাযজ্ঞে, শহীদ শামসুল হক হলের সামনে কাটা হয়েছে বড় দুইট ইউক্যালিপটাস গাছ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আমবাগানে গাছ ছেটে ন্যাড়া করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আব্দুল জব্বারের মোড় হতে একটু এগিয়ে গিয়ে এক্সটেনশন ভবনের সামনে, ভবনে ছায়া পড়ার নাম করে কাটা হয়েছিল বড় বড় দুইটা রেইন ট্রি গাছ। 

বাকৃবির পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েস বাকৃবি শাখার সভাপতি মো. বকুল আলী জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছি বিষয়টি নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন আব্দুল জব্বারের মোড় হতে ফার্স্ট গেইট পর্যন্ত যে চার লেনের রাস্তাটি হচ্ছে সেটির একপাশের গাছ কৃষ্ণচূড়া ল্যান্ডস্কেইপ ডিপার্টমেন্টের কাছে অনুমতি নিয়েই কাটা হয়েছে। পরবর্তীতে আমাদেরকে সাথে রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রাঙ্গণের বৃক্ষরোপণ করবে বলেও জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার প্রধান অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আমি জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সচেতনতার প্রশংসা করি। শিক্ষার্থীদের সচেতনতার এই বিষয়টিকে আমি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছি। বাকৃবি কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক এবং যে কোনও গাছ কাটার পূর্বে সেই গাছ কাটা আদৌ গুরুত্বপূর্ণ কিনা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে। যদি অবকাঠামো এবং নিরাপত্তার জন্য কোনো গাছ কাটা জরুরী হয় তাহলে এক বছরের নার্সিংসহ কমপক্ষে পাঁচটি গাছ লাগানো নিশ্চিত করতে হবে বলে আমার পরামর্শ থাকবে। আমি গাছ কাটার বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি এবং ইতোমধ্যে কেটে ফেলা গাছগুলো সম্পর্কে আবার নিরীক্ষা করবো বলে আশ্বাস দিচ্ছি।

 

সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence