বিসিএস নেই, ঢাবির গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীও নেই

রোববার ঢাবির কবি জসীম উদদীন হলের রিডিং রুমে ফাঁকা পড়ে থাকা আসন
রোববার ঢাবির কবি জসীম উদদীন হলের রিডিং রুমে ফাঁকা পড়ে থাকা আসন  © টিডিসি ফটো

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার দৌড়ে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে থাকেন, তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অন্যতম। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রেও থাকে প্রতিযোগিতা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই চান বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে একটি আসন নিজের দখলে রাখতে। ফলে প্রতিদিন সকালে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। অনেকে আসন না পেয়ে ফিরেও যান। হলগুলোর রিডিং রুমেও থাকে আসন দখলের প্রতিযোগিতা।

এরইমধ্যে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (এমসিকিউ)। এদিন আট বিভাগীয় শহরের ২১৫ কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর পরদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে দেখা গেল উল্টো চিত্র। সাধারণ সময় শনিবার সকাল ১০টায় লাইব্রেরি খুলে দেওয়া হয়।

গতকাল শনিবার সকালে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কারণে বেলা ৩টা থেকে খুলে দেওয়া হয় লাইব্রেরি। এদিন অধিকাংশ আসনই ছিল ফাঁকা। হাতেগোনো দু’একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য এসেছিলেন বলে জানা গেছে। আজ রোববার শিক্ষার্থী কিছু বাড়লেও অনেক আসন ফাঁকা থাকতে দেখা গেছে।

লাইব্রেরীতে একাডেমিক পড়াশোনার চেয়ে চাকরির জন্য পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের আনাগোনাই বেশি। তাদের প্রায় সবার টার্গেট থাকে বিসিএস কিংবা ব্যাংকের চাকরি। শুক্রবার বিসিএস পরীক্ষা হওয়ায় শনিবার লাইব্রেরিতে আসার আগ্রহ সবার কম থাকে। দু’একদিন সবাই কিছুটা বিরতি নিয়ে আবার পড়াশোনার জন্য ফিরবেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, লাইব্রেরীতে একাডেমিক পড়াশোনার চেয়ে চাকরির জন্য পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের আনাগোনাই বেশি। তাদের প্রায় সবার টার্গেট থাকে বিসিএস কিংবা ব্যাংকের চাকরি। শুক্রবার বিসিএস পরীক্ষা হওয়ায় শনিবার লাইব্রেরিতে আসার আগ্রহ সবার কম থাকে। দু’একদিন সবাই কিছুটা বিরতি নিয়ে আবার পড়াশোনার জন্য ফিরবেন।

চাকরিপ্রার্থী সূর্য সেন হলের ২০১৬-১৭ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রিলি পরীক্ষা দেওয়া আগে এক প্রকার যুদ্ধ করে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে হতো। এমনও দিন গেছে, লাইব্রেরির সামনে ফজরের সময় ব্যাগ রেখে গেছি। পরবর্তীতে ৮টায় ভেতরে প্রবেশ করেছি। এখন আর সেরকম ভিড় নেই। আমার বিসিএসের প্রিলি পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছে। এজন্য সময় নষ্ট না করে রিটেনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আসন অধিকাংশই ফাঁকা। তেমন কোনও শিক্ষার্থী নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। তারা জানান, শুক্রবার বেলা ৩টা, শনিবার সকাল ১০টা থেকে লাইব্রেরি খুলে দেওয়া হয়। আর অন্য দিনগুলোতে লাইব্রেরি খোলে সকাল ৮টায়।

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে পড়া ঢাবির একটি হল ও সায়েন্স লাইব্রেরির ছবি

রোববার লাইব্রেরীতে পড়তে আসা ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। গরমের কারণেও অনেকে এখানে এসে পড়ার জন্য ভিড় করেন। তবে বিসিএস পরীক্ষার পরে তেমন ভিড় নেই সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে। কিছুদিন পর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। ভিড় না থাকায় স্বাচ্ছন্দে লেখাপড়া করতে পারছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের রিডিং রুমও দেখা গেছে ফাঁকা। শনিবার হাতেগোনো কয়েকজনকে পড়তে দেখা গেছে। তবে আজ রোববার কিছু শিক্ষার্থী পড়লেও রিডিং রুমের অনের আসন ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কয়েকদিন পর ফের আগের মতো অবস্থা হবে। দু’একদিন হয়তো সবাই বিরতি নেবেন।

আরো পড়ুন: ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে অজ্ঞান ঢাবি ছাত্রী

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ড. মো. নাসিরউদ্দিন মুন্সী বলেন, লাইব্রেরীতে এখন চাকরিপ্রার্থীদের আনাগোনা বেশি। অনেক সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কারণে ঢুকতেও পারেন না। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হচ্ছে। সবাই কার্ড পেলে তখন হয়তো পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে। এ বিষয়ে উপাচার্য স্যারেরও নির্দেশনা আছে। বিষয়টি কঠিন হলেও চ্যালেঞ্জটা কাউকে না কাউকে নিতেই হবে।

আজ রোববার সূর্য সেন হলের রিডিং রুমের দৃশ্য

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দেশের আট বিভাগীয় শহরে ২১৫ কেন্দ্রে একযোগে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (এমসিকিউ) অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে পরীক্ষা। সাড়ে ৯টার মধ্যে সবার পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করার জন্য বলা হয়। তবে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পের আসতে দেখা যায়। ফলে অনেকে পরীক্ষা দিতে পারেননি।

গত বছরের ৩০ নভেম্বর ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আবেদন চলে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় আবেদন, যা চলে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৪৬তম বিসিএসের জন্য আবেদন করেন ৩ লাখ ৩৮ হাজারেরও কিছু বেশি চাকরিপ্রার্থী। ৪৬তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে শূন্য পদের সংখ্যা ৩ হাজার ১৪০টি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে স্বাস্থ্য ক্যাডারে। এছাড়া শিক্ষা ক্যাডারে বিভিন্ন বিষয়ে ৫২০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence