ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে চুন্নুর বক্তব্য ভিত্তিহীন দাবি চবি প্রশাসনের

  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু যে মন্তব্য করেছেন তা অনভিপ্রেত, অগ্রহণযোগ্য ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদে জাতীয় সংসদের এমপি মুজিবুল হক চুন্নু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ সালের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে একটি বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের ভর্তি ফরম বিক্রির ২৩ কোটি টাকা ভিসি, প্রো-ভিসি, শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে জমা হয়নি।" তাঁর দেয়া বক্তব্যটি অগ্রহণযোগ্য, অনভিপ্রেত ও ভিত্তিহীন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনার জন্য খরচের বিভিন্ন খাত ডিনস্ কমিটি কর্তৃক সুনির্দিষ্ট করা আছে। এ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্ষদ গৃহীত এবং অনুমোদিত নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন খাতে খরচ করা হয়, এবং যা বহু বছর যাবৎ হয়ে আসছে। এর মধ্যে পত্রিকায় ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, অনলাইন আবেদন গ্রহণ, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রশ্নপত্র মডারেশন, প্রশ্নপত্র কম্পোজ, প্রশ্নপত্র ছাপানো, ফটোকপি, প্রশ্নপত্র প্যাকেজিং, উত্তরপত্র ছাপানো, ফলাফল প্রস্তুত করা, ফলাফল ছাপানো, কাগজপত্র ও স্টেশনারী ক্রয়, পরিদর্শকের সম্মানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মানী, আপ্যায়ন, পরিবহনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করা হয়। 

আরো বলা হয়, ভর্তি পরীক্ষা প্রতি বছর সম্মানিত ইউনিট প্রধানরা পরিচালনা করেন যা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও হয়ে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের নিয়ে গঠিত 'ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি' কর্তৃক মাননীয় উপাচার্য ও মাননীয় উপ-উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, কর্মকর্তাদের সম্মানী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। ভর্তি পরীক্ষার টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্ব আয় হিসেবে ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়। সুতরাং মাননীয় সংসদ সদস্যের বক্তব্য তথ্য নির্ভর নয় বরং অনুমান নির্ভর। সংসদ সদস্যের বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মর্মাহত হয়েছেন। এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষার ফি এর সাথে ছাত্রলীগসহ কোন ছাত্র সংগঠনের কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই, ছিলোনা।

উপাচার্য প্রসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়র উপাচার্য  অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুপারিশ ক্রমে দ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল থাকবেন। সুতরাং উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে মর্মে বক্তব্য অযৌক্তিক। এই ধরনের ঢালাও বক্তব্য উপাচার্য নিয়োগের সরকারী প্রজ্ঞাপনকে হেয় করেছে। এ বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংসদ সদস্যকে অনুরাধ করছেন।

অতএব, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান নিয়ে কোন ধরণের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য প্রদান এবং সংবাদ পরিবেশন করা জনমনে বিভ্রাট সৃষ্টি করা দুঃখজনক। কর্তপক্ষের বক্তব্য আপনার বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশের প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরাধ করা যাচ্ছে। 

উল্লেখ, এর আগে গতকাল জাতীয় সংসদ অধিবেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি ফরম বিক্রির ২৩ কোটি টাকা ভিসি, প্রো ভিসি, শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে জমা হয়নি। প্রতি বছর যদি এ রকম হয়, তাহলে দেশটা কীভাবে চলছে? এমন প্রশ্ন তুলেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।


সর্বশেষ সংবাদ