ঢাবি ছাত্রের নাকে-মুখে অনবরত স্টাম্পের আঘাত গ্যাংয়ের সদস্যদের

গ্যাংয়ের মারধরের শিকার ঢাবি ছাত্র জোবায়ের ইবনে হূমায়ুন
গ্যাংয়ের মারধরের শিকার ঢাবি ছাত্র জোবায়ের ইবনে হূমায়ুন  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলপাড়া এলাকায় ‘প্রলয়’ গ্যাংয়ের হামলার শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জোবায়েরের নাক-মুখ-ঠোঁটে অন্তত পাঁচ-ছয়বার স্টাম্প দিয়ে আঘাত করা হয়। এর ফলে খেতে পারছেন না কোনোকিছু। বাম চোখটি ফুলে উঠেছে। শনিবার (২৫ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় এ মারধরের ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ওপর ‘প্রলয়’ গ্যাংয়ের ২০-৩০ জন অতর্কিত হামলা করে। আহত জোবায়ের ইবনে হূমায়ুন অপরাধবিজ্ঞানের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া আরও দুজন শিক্ষার্থী অল্প মারধরের শিকার হয়েছেন। তারা হলেন, খালিদ মাহম্মুদ মিরাজ ও মো. রোকনুজ্জামান খান।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জোবায়ের জানান, আমাকে টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজেমেন্টের সিফরাত সাহিলের ফোন দিয়ে কল দেওয়া হয়েছিল। ট্রুকলার দিয়ে আমি নিশ্চিত হয়েছি। আমার সঙ্গে দেখা করার কথা বলে অতর্কিত হামলা চালায়। সে সময় স্টাম্প, রড, বাঁশ দিয়ে ২০-৩০ জন আমার ওপর হামলা করে ছয়-সাত মিনিট পিটিয়েছে। নাকে-মুখে অন্তত পাঁচ-ছয়বার স্টাম্প দিয়ে আঘাত করেছে। তখন নাক ফেটে অনবরত রক্ত ঝরছিল।

তিনি বলেন, সারা শরীরে রড ও স্টাম্পের আঘাত রয়েছে। শরীর ফুলে গেছে। এজন্য না পারছি খেতে, না পারছি উঠে বসতে। আমার বা চোখের পাশে মারাত্মকভাবে আহত হওয়ায় দেখতে সমস্যা হচ্ছে। আমি সিটি স্ক্যান, এক্স-রেসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করেয়েছি। এর মধ্যে এক্স-রের একটা রিপোর্ট এসেছে। সেখানে নাকে ফ্র‍্যাকচার ধরা পড়েছে। বাকি রিপোর্টগুলো পেলে আরও জানতে পারবো। এখন শরীর নড়াতে পারছি না। নাক-মুখ ফুলে যাওয়ায় খেতেও পারছি না।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীর সূত্রে হামলায় অভিযুক্ত প্রাথমিকভাবে যাদের নাম জানা গেছে, তারা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা জিয়া হলের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের তবারক, টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজেমেন্টের সিফরাত সাহিল, মার্কেটিং বিভাগের মোহাম্মদ শোভন, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সৈয়দ নাসিফ, কবি জসীমউদ্দিন হলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ, ফিন্যান্স বিভাগের মোশাররফ হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের ফেরদৌস আলম ইমন, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ফারহান লাবিব, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের হেদায়েতুন নুর, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাদমান তাওহিদ বর্ষণ, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবু রায়হান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অর্ণব।

এ ছাড়া জিয়া হলের ফয়সাল আহমেদ সাকিব, জগন্নাথ হলের প্রত্যয় সাহা, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আব্দুল্লাহ আল আরিফ, জসীমউদ্দিন হলের রহমান জিয়া ও নাইমুর রহমান দুর্জয়ের নাম এসেছে অভিযুক্ত হিসেবে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেওয়ায় ও মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইতিমধ্যে জসীম উদ্দিন হল প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট বিষয়টি দেখছেন। বিঝয় একাত্তর হল ও জিয়া হলের প্রভোস্টের সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যক্তিগত আলোচনা করেছি। এ ঘটনার সাথে যে যে জড়িত, সবাইকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ