যেসব কারণে পড়তে পারেন হাবিপ্রবিতে

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশের বিজ্ঞান  ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলার মধ্যে অন্যতম দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। তেঁভাগা আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামে নামকরণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির।

বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরুর পূর্বে এটি ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (AETI) হিসেবে কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রদান করতো। পরে ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর ইনস্টিটিউটকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। ৮ জুলাই ২০০১ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হয় এবং ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। 

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। ইতোপূর্বে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করলেও বর্তমানে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়টির ৯ টি অনুষদে প্রায় ১৭০০ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকেন। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য রইলো হাবিপ্রবির সুযোগ-সুবিধার বিস্তারিত তথ্য।

অভিজ্ঞ শিক্ষক: 
বর্তমানে দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে শিক্ষক সংকট। বিশেষত ১৮টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সংখ্যা ২০ এর নিচে। তবে এদিক থেকে বেশ এগিয়ে রয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী হাবিপ্রবিতে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৩১৯ জন যাদের মধ্যে অধ্যাপক ১১৪ জন, সহযোগী অধ্যাপক ৬৯ জন, সহকারী অধ্যাপক ১২১ জন  এবং প্রভাষক ১৪ জন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা দক্ষ শিক্ষকদের অধীনে তাদের শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করার সুযোগ পেয়ে থাকেন।

একাডেমিক সুযোগ-সুবিধা:
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে করোনাকালীন সেশনজট থাকলেও স্বাভাবিক সময়ে সাধারণত চার বছরেই স্নাতক সম্পন্ন হয়। প্রায় প্রতিটি বিভাগেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুমসহ প্রয়োজনীয় ল্যাব রয়েছে। একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি হাতে কলমে শিক্ষার জন্য রয়েছে কৃষক সেবা কেন্দ্র, ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতাল ও মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক এবং কৃষি,মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ গবেষণা কমপ্লেক্স।

গবেষণার সুযোগ:
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় শতাধিক অধ্যাপক থাকায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা অপেক্ষাকৃত বেশি গবেষণার সুযোগ পেয়ে থাকেন। গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.)। এছাড়া দুষ্প্রাপ্য গাছ-গাছালির আকর্ষণীয় সংগ্রহ নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য একটি জার্মপ্লাজম সেন্টারও রয়েছে।

অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা:
সবুজ গাছপালার সমারোহে বেষ্টিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন প্রশাসনিক ভবন, ৫টি একাডেমিক ভবন, আধুনিক সাজসজ্জা বিশিষ্ট ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসন বিশিষ্ট দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটরিয়াম, একটি জিমন্যাশিয়াম, টিএসসি, ক্যান্টিন, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ ২টি মসজিদ, শহীদ মিনার, ৫টি ছাত্র হোস্টেল, ৪টি ছাত্রী হোস্টেল, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব, আবাসিক ভবন, শিশুপার্ক, পোষ্ট অফিস, রূপালী ব্যাংক শাখা, মেঘনা ব্যাংক শাখা, শ্রমিক ব্যারাক, নিজস্ব বৈদ্যুতিক লাইন, বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা।

সফল অ্যালামনাই:
যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের সফলতা পরবর্তী শিক্ষার্থীদের সাফল্য যাত্রাকে সহজ করে। হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ বর্তমানে দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন। ৪০ তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ( বিসিএস) পরীক্ষায় দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) থেকে প্রায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন। যা বাংলাদেশের সকল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক। শুধুমাত্র ৪০ তম বিসিএস-ই নয় প্রতিবছরই বিসিএস সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় হাবিপ্রবির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন যা প্রমাণ করে শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনের জন্য সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারছে প্রতিষ্ঠানটি।

 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence