ওয়াই-ফাই নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়ছে, সতর্কতা ও করণীয়

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

বর্তমান ডিজিটাল যুগে ঘরের ইন্টারনেট সংযোগ আর শুধু বিনোদন বা সামাজিক যোগাযোগে সীমাবদ্ধ নেই। অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ, স্মার্ট টিভি, সিসিটিভি ক্যামেরা ও নানা স্মার্ট হোম ডিভাইস এখন সরাসরি হোম ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল। ফলে এই নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত না হলে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস ও আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাউটারের কিছু মৌলিক সেটিংস ঠিক করলেই হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। পাশাপাশি পাবলিক বা ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময়ও বাড়তি সতর্কতা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, প্রথমেই রাউটারের ডিফল্ট নেটওয়ার্ক নাম বা এসএসআইডি পরিবর্তন করা উচিত। অনেক রাউটারে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত থাকে, যা হ্যাকারদের জন্য সহজে টার্গেট চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। নেটওয়ার্কের নামে যেন ব্যক্তিগত তথ্য বা রাউটার ব্র্যান্ডের ইঙ্গিত না থাকে, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

এ ছাড়া শক্তিশালী ও ইউনিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে উল্লেখ করছেন তারা। সহজ শব্দ, জন্মতারিখ বা পরিচিত তথ্য দিয়ে তৈরি পাসওয়ার্ড সহজেই ভাঙা যায়। তাই অন্তত ২০ অক্ষরের দীর্ঘ পাসওয়ার্ড, যেখানে বড়-ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন থাকবে—এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

নেটওয়ার্ক এনক্রিপশন চালু রাখাও অত্যন্ত জরুরি। এনক্রিপশন ছাড়া ডাটা আদান-প্রদান হলে তথ্য চুরির আশঙ্কা বেড়ে যায়। বর্তমানে WPA2 এনক্রিপশনকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য মান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নেটওয়ার্ক নাম ব্রডকাস্ট। এটি চালু থাকলে আশপাশের যে কেউ ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক দেখতে পায়, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। তাই বাড়ির ব্যবহারের ক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক নাম ব্রডকাস্ট বন্ধ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাউটারের ফার্মওয়্যার নিয়মিত আপডেট করাও নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত নিরাপত্তা ত্রুটি সংশোধনের জন্য আপডেট প্রকাশ করে। এসব আপডেট সময়মতো ইনস্টল না করলে রাউটার সহজেই সাইবার আক্রমণের শিকার হতে পারে।

এ ছাড়া রাউটারের বিল্ট-ইন ফায়ারওয়াল চালু আছে কি না, তা পরীক্ষা করে নেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে। ফায়ারওয়াল বন্ধ থাকলে নেটওয়ার্ক বাইরের আক্রমণের জন্য অনেকটাই উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।

সবশেষে, বিশেষ করে পাবলিক বা ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় ভিপিএন ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। ভিপিএন ইন্টারনেট ডাটাকে এনক্রিপ্টেড টানেলের মাধ্যমে পাঠায়, ফলে তথ্য চুরি বা নজরদারির ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!